মো.ইব্রাহিম খলিল, হোমনা , কুমিল্লা >>
কুমিল্লার হোমনায় স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় ও যৌতুক না দেয়ায় দুই সন্তানের জননী নাজমা আক্তার (২৮) নামের এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে নিহতের স্বামীর বাড়িতে এ হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে । পুলিশ গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে বুধবার ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। নিহত গৃহবধু নাজমা আক্তার উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মো. মাইনুদ্দিনের স্ত্রী ও তিতাস উপজেরার কড়িকান্দি গ্রামের আবদুস সালামের কন্যা। এ ঘটনায় মো.শহীদুল্লাহ (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ ।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৬ বছর আগে নিহত নাজমা আক্তারের পরিবারিকভাবে দূর্গাপুর গ্রামের হোসেন মোল্লার ছেলে মাইনুদ্দিনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর জানা যায়, মাইনুদ্দিন এর আগেও আরো দু’টি বিয়ে করেছেন। ওই স্ত্রীদের সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটে। কিন্তু পূর্বের দুই বিয়ের কথা গোপন করে নাজমাকে বিয়ে করেন মাইনুদ্দিন। বিয়ের পর তাদের সংসার মোটামুটি ভালোই চলছিল। গত কয়েক মাস ধরে নাজমার স্বামী যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে এবং অনেক সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় নাজমার ওপর।এরই মধ্যে নতুন করে মাইনুদ্দিন তার তালাকপ্রাপ্তা ২য় স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আগের স্ত্রী মাইনুদ্দিনকে বলে, তাকে পুনরায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা হলে মাইনুদ্দিনকে ১৬ লাখ টাকা দেয়া হবে।এরই সূত্র ধরে মাইনুদ্দিন নাজমার নিকট ১৬ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং বলে টাকা না দিতে পারলে তুমি আমার সংসার করতে পারবানা , আমি আমার আগের স্ত্রীকে নিয়ে আসবো।এ নিয়ে নাজমার সাথে মাইনুদ্দিনের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারন করে।গত এক মাস আগেও যৌতুকের জন্য মাইনুদ্দিন নাজকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারে নি। পরে পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে নাজমা আক্তার তার স্বামীকে পরকীয়া করতে নিষেধ করলে প্রথমে স্বামী ও পরে স্বামীর স্বজনরা তাকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যার ঘটনা সাজিয়ে পালিয়ে যায়।পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।এ ব্যাপারে নিহতের বাবা আবদুস সালাম (৬০) বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ।
হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বী জানান, এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লাশ উদ্ধার করে বুধবার ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।এ ঘটনায় মো.শহীদুল্লাহ (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে এবং অন্য আসামীদের গ্র্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে ।