মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : রংপুরে ৪ দফা দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের সরকারি-বেসরকারি সব চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি করাসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ‘যুব প্রজন্ম’ নামে একটি সংগঠন।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরের সামনে প্লাকার্ড, পোস্টার ও ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান নেয় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। পরে সেখানে প্রায় শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশীর অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
তাদের দাবিগুলো হলো- সব ধরনের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বাড়ানো, নিয়োগে দুর্নীতি ও জালিয়াতি বন্ধ করে পরীক্ষার (প্রিলিমিনারি ও রিটেনে) প্রাপ্ত নম্বরসহ ফলাফল প্রকাশ করা, চাকরিতে আবেদনের ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা করা এবং একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।
মানববন্ধনে চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, সবকিছুতে বাড়াবাড়ি হলেও চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সসীমা না বাড়ানোর ব্যাপারটি রহস্যজনক। প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করে চাকরি নামক সোনার হরিণ খুঁজতে খুঁজতে বেকারের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। নিয়োগে বৈষম্য ও অনিয়ম বন্ধ না হওয়ায় বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কারও এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই।
তারা আরও বলেন, মুজিব শর্তবর্ষের একটি অঙ্গীকার ছিল যুব সমাজের জন্য আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অনেক শূন্যপদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রায় ৪ লাখ (৩, ৮০, ৯৯৫টি) শূন্যপদ রয়েছে। দেশের
সংবিধান অনুযায়ী বয়স বাড়ানো এখন সময়ের দাবি উল্লেখ করে তারা বলেন, ২০১১ সালের সাধারণ চাকরিজীবীদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৬০ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ১৯৯১ সালে যখন গড় আয়ু ৫৭ বছর ছিল তখন শেষবারের মতো ২৭ থেকে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়। এই ৩০ বছরে গড় আয়ু ১৮ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হলেও বৃদ্ধি হয়নি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও কোটাধারীদের ক্ষেত্রে তা ৩২ বছর। এ সময় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি এবং বাস্তবতার নিরিখে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধিতে যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদ। অন্যথায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরসহ দেশের প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা শহরে সমাবেশ করে চাকরিপ্রত্যাশীরা। আগামী ১৬ জানুয়ারি শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে চার দফা দাবি আদায়ে পরিষদ থেকে মহাসমাবেশের আহ্বান করা হয়েছে।
