ঝিনাইদহ প্রতিনিধি >>
ঝিনাইদহ সদরের মহারাজপুর ইউনিয়নে খড়িখালী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আয়া নিয়োগে ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে প্রধান শিক্ষক এবং পরিচালনা কমিটির সভাপতি ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। দেড় বছর আগে চাকরি দেওয়ার কথা বলে খোরশেদ আলম সুজন নামের একজনের নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা নিয়ে তার প্রার্থীকে চাকরি না দিয়ে আরেকজন ৬ লক্ষ টাকা দেওয়ায় তাকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।
বিদ্যালয় অফিসসূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ্যতার কারণে বিদ্যালয় প্রতিঠালগ্নে নিয়োগপ্রাপ্ত আয়া জাহানারা খাতুন পদত্যাগ করার কারণে শুন্য পদে গত ১৮/০২/ ১৯ তারিখে স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। মোট আবেদন পড়ে ৯টি। সেই আলোকে ৩০/০৬/১৯ তারিখে সাক্ষাৎকার এর মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ মোতাবেক কমিটির সভায় অনুমোদন দেওয়া হবে বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন ভট্টাচার্য জানায়।
সদ্য অবসরপ্রাপ্ত আয়া জাহানারা খাতুন সাংবাদিকদের জানায়, আমার পায়ে সমস্যা থাকায় আমাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে সভাপতি গদা ডাক্তার। আমার শ্বশুর এই প্রতিষ্ঠানে জমি দান করেছিলো তাই ১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়ের শুরু থেকেই আমি এই প্রতিষ্ঠানে আয়া পদে চাকরি করছি। এখনও আমার সাড়ে তিন বছর চাকরি ছিলো কিন্তু আমাকে করতে দিলো না। প্রত্যেক মাসে আমার ৩ হাজার টাকার ওষুধ লাগে তাই আমি কিছুদিন সময় চেয়েছিলাম। সে আমাকে একদিনও সময় দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিল। আমি তাকে প্রায় দুই বছর ধরে প্রত্যেক মাসে বেতন পেয়ে ১২০০ টাকা এবং গদা ডাক্তারের ভাই স্কুলের কেরানি প্রদীপ ব্যানার্জিকে ৩০০ টাকা প্রত্যেক মাসে মোট ১৫০০ টাকা করে দিতাম। তাপরও সে আমাকে চাকরিতে রাখলো না। এছাড়াও আমার স্বামীকে মুক্তিযোদ্ধার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে আমার নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলো কিন্তু কার্ড করে দেয় নাই, টাকাও ফেরত দেয় নাই।
তন্নি খাতুন নামের প্রার্থীর শ্বশুর সুজন জানায়, জাহানারা খাতুন পদত্যাগের পর স্কুলের সভাপতি প্রনব ব্যানার্জি অরফে গদা ডাক্তার আমার ছেলের বউকে আয়া পদে চাকুরি দেবে বলে আমার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা নেয়। এতদিন আমাকে আশা দিয়ে রেখেছে। এখন কাজলের নিকট থেকে ৬ লক্ষ টাকা পেয়ে কাজলের স্ত্রী সন্ধানীকে চাকরি দিলো কিন্তু আমার ছেলের বৌকে চাকরি দিলো না। আমার টাকাও ফেরত দেয় নাই, শুধু ঘুরাচ্ছে।
পারভীন খাতুন নামের অন্য এক প্রার্থীর শাশুড়ী এবং বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্য হাসিনা খাতুন অত্যন্ত আক্ষেপ করে বলেন, আমি এই স্কুলে ১২১শতক জমি দিয়েছি ।আমার জমির ওপর এই স্কুল প্রতিষ্ঠিত। তাছাড়াও আমি দাতা সদস্য হিসাবে এই স্কুলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিনা পারিশ্রমিকে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে আসছি। আমার বেটার বউকে চাকরিটা দেবার জন্য গদা ডাক্তার এবং প্রধান শিক্ষকের হাতেপায়ে ধরেছিলাম কিন্ত তারা কাজলের নিকট থেকে ৬ লক্ষ টাকা পেয়ে সন্ধ্যানীকে চাকরিটা দিলো, আমার অনুরোধ শুনলো না।
এ ব্যাপারে খড়িখালী মায়াময় বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রনব ব্যানার্জির নিকট জানতে চাইলে তিনি এ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি নিয়োগের ব্যাপারে বা মুক্তিযোদ্ধার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে কোন টাকা পয়সা গ্রহণ করি নাই।