ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নে নিষিদ্ধ পুর্ববাংলা কমিউনিষ্ট পার্টির সাবেক নেতা মুলাখান বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য শুরু করেছে ভয়ভীতি প্রদর্শণ ও মারধর। গত কয়েকদিনে তার বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ৫ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বেশ কয়েকজন। বাহিনীর অত্যাচার ও হামলা আতঙ্কে বাড়িছাড়া রয়েছে ২০ টি পরিবারের পুরুষ সদস্যরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন মামলার আসামী মুলাখান দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার নেতৃত্বে চাঁদ আলী, রিংকু, লিমন, আলা, দরবেশ, বল্টু, ঝন্টু, বাদশা, আসাদুল ইয়ারুল, পিপুল, সাদ্দামসহ আরও কয়েকজন দিন-রাত ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করছে। চলতি বছরের ১৭ মার্চ নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায় ওই বাহিনী। এসময় পরিষদ ও পরিষদের সামনে থাকা ৪ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে তারা। একই দিনে চাঁদা না দেওয়ায় বাগুটিয়া গ্রামের মোক্তার বিশ্বাসকে কুপিয়ে যখম করে। পরদিন একই গ্রামে আলা লস্করকে মারধর করে মুলাখান বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে নলডাঙ্গা বাজারে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করতে যায়। এসময় চেয়ারম্যানের সমর্থকরা এগিয়ে এলে সেদিন চেয়ারম্যান রক্ষা পায়। এছাড়াও ওই বাহিনীর অত্যাচারে বাড়িছাড়া বাগুটিয়া গ্রামের বিপ্লব, আসলাম, খালিজুর, ছমির, লতিফ, হাকিম, কোবাদ আলী, বাক্কার, তাকু মন্ডল, আলমগীর, আনুরসহ ২০ টি পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। হামলা ও মারধরের ভয়ে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বিভিন্ন গ্রামে ও আত্মীয়দের বাড়িতে অবস্থান করছে। আর ভয়ে দিন কাটাচ্ছে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এতে তাদের ক্ষেতের ফসল পরিচর্যা করতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকে বলেন, মুলাখান, ঝন্টু, চান্দা, রিংকু, লিমন, পিপুল একাধিক মামলার আসামী। তারা দিন-রাত সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। তারা একাধিক মামলার আসামী হওয়া স্বত্বেও এলাকায় স্বদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, মুলাখান ইত:পূর্বে বিধান গ্রুপ, রবিন গ্রুপ, তিতাস গ্রুপ, সেলিম গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন বিদেশে পলাতক থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরে নিজেই একটি বাহিনী চালাচ্ছেন। এলাকার প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে নানা অপকর্ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত এসব অত্যাচারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি এলাকাবাসীর।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুলাখানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি বাগুটিয়ার ঘটনা। আমার আড়মুখ গ্রামে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি একথা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।