যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক ও ড্রাইভারের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি>>
ঝিনাইদহের মহেশপুরে একটি ইটভাটায় ‘চাঁদাবাজি’ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অফিসের পরিদর্শক জাহিদ হাসান ও তার ড্রাইভার হারুন অর রশিদ মানিক। এ ঘটনায় মহেশপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমম্বিত অফিসে পাঠয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও জোরপূর্বক ব্যাগের মধ্যে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা ঢুকিয়ে মারধর করার দায়ে পাল্টা মামলা করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অফিসের পরিদর্শক জাহিদ হাসান। এ ঘটনা নিয়ে মহেশপুর ইটভাটা মালিক সমিতি ও পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অফিস মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অফিসের পরিদর্শক জাহিদ হাসান মহেশপুর থানায় দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করেছেন, সোমবার বিকালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে দায়েরকৃত মামলার তদন্তে তারা মহেশপুরের শ্যামকুড় গ্রামের সীমান্ত ব্রিকস নামে একটি ইট ভাটায় যান। সেখানে যাওয়ার পর মেসার্স রাফি ব্রিকসের মালিক রুবেল, সীমান্ত ব্রিকসের মালিক লোকমান হোসেন ও ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম তাকে হেনস্থা করেন। এক পর্যায়ে তার ব্যাগে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা ঢুকিয়ে ‘চাঁদাবাজির’ মিথ্যা অপবাদ দেয়। মামলার তদন্তে গিয়ে তাদের চড় থাপ্পড় মারা হয় ও তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ভেঙ্গে ফেলা হয় বলেও পরিদর্শক জাহিদ হাসান মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন। এ ঘটনায় তিনি মহেশপুর থানায় সোমবার রাত ১২টার দিকে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো দুই জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা প্রদান, অবৈধ অবরোধ, ‘মারপিট’, ‘জখম’, মোবাইল ভেঙ্গে ক্ষতিসাধন, ‘ভয়ভীতি’ ও ‘হুমকি’ প্রদর্শনের অভিযোগে মামলা করেছেন, যার মামলা নং ০৪/২১।
এদিকে মহেশপুর ইটভাটা মালিক সমিতির নেতা রুবেল ও সীমান্ত ব্রিকসের মালিক লোকমান হোসেন জানিয়েছেন, গত বছর ঘুষের টাকা না পেয়ে মহেশপুরে বেশ কয়েকটি ইটভাটা ভেঙ্গে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর। সোমবার তারা আবারো ‘চাঁদা’ নিতে মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত ব্রিকসে আসেন। ‘চাঁদা’ না দিলে তারা আবারো মামলা ও ইটভাটার ক্ষতি সাধন করার ‘হুমকি’ দিলে তাদের এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আমরা ‘ঘুষের’ টাকাসহ তাদের পুলিশে সোপর্দ করি।
সীমান্ত ব্রিকসের মালিক লোকমান হোসেন জানান, আমরা মহেশপুর থানায় ‘চাঁদাবাজির’ মামলা দায়ের করলে সেটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমম্বিত অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমরা ওই অভিযোগ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার ইটভাটা মালিকরা এখন দুদকের যশোর অফিসে অবস্থান করছি।
বিষয়টি নিয়ে মহেশপুর থানায় ওসি সাইফুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকালে জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অফিসের পরিদর্শক জাহিদ হাসান একটি মামলা করেছেন। সেটি রেকর্ড করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তিনি বলেন, মহেশপুর ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একটি ‘চাঁদাবাজির’ মামলা করা হয়। কিন্তু আমরা সেটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যশোর দুদক অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছি।
কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহায়মেনুল ইসলাম পরিবেশ অধিদপ্তর ও মহেশপুর ইটভাটা মালিক সমিতির পৃথক দুটি মামলা দায়েরের খবরটি নিশ্চিত করেন।