crimepatrol24
১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, এখন সময় সকাল ৭:২৭ মিনিট
  1. অনুসন্ধানী
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-আদালত
  6. আঞ্চলিক সংবাদ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আফ্রিকা
  9. আবহাওয়া বার্তা
  10. আর্কাইভ
  11. ইউরোপ
  12. ইংরেজি ভাষা শিক্ষা
  13. উত্তর আমেরিকা
  14. উদ্যোক্তা
  15. এশিয়া

না খেয়ে মরার চেয়ে করোনায় মৃত্যু অনেক ভালো : রংপুরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

প্রতিবেদক
মো: ইব্রাহিম খলিল
আগস্ট ২, ২০২১ ১০:১৬ অপরাহ্ণ

 

মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে দেশবাসীকে নিরাপদ রাখতে সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউনে জনজীবনের হতাশা প্রকাশ পাচ্ছে। লকডাউনে গৃহবন্দি বিভিন্ন শ্রমিক ও পেশাজীবীদের অনেকেই পথচলাচল শুরু করছেন দুমুঠো রুজি রোজগারে। দিনকাল কেমন যাচ্ছে এমন কঠোর লকডাউনে? এর উত্তরে সরকারের নিকট সাহায্যের আকুতি জানিয়েছেন সকলেই। নানান সমস্যার সমাধানে দাবি তুলেছেন খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কেউ কেউ। তাদের অনেকেই সঞ্চিত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও ঘটিয়েছেন।সরেজমিনে রংপুর নগরী ঘুরে জনমানুষের অসহায়ত্বের চিত্র ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে ।

লকডাউন পরিস্থিতিতে পুরাতন বই বিক্রেতা কাওসার আহাম্মেদ শান্ত বলেন, ২০২০ সালের ২৬ মার্চ মাস থেকে কোনো বই বিক্রি নেই । স্কুল কলেজ বন্ধ, শিক্ষা ব্যবস্থা যদি বন্ধ থাকে, বই বিক্রি হয় কিভাবে? এভাবে বিক্রি বন্ধ থাকলে ভিক্ষা করে খাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার ব্যাপারে সরকারকে দ্রুত কার্যকরী ও ডিজিটাল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বেল্ট বিক্রেতা রোমান আহমেদ বাদল বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা বিক্রি হয়, ঋণের জ্বালায় পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে আছি।

আরেক ব্যবসায়ী রিপন বলেন, সমিতির জ্বালায় ফোন বন্ধ করে রেখেছি, আমাদের পরিবারগুলো আজ অসহায় হয়ে পড়েছে। আমরা বাঁচতে চাই। আমরা ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ব্যবসা করতে চাই।

সিটিপার্ক মার্কেটের সাইকেল পার্টস ব্যবসায়ী সাদেকুল ইসলাম বলেন, লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট করেও আজ চোরের মতো দোকান খুলতে হচ্ছে। গাড়িসহ অনেক কিছুই চলছে, তাহলে আমাদেরকে বন্ধ রাখতে হবে কেন? এখানে অনেকেই দোকানভাড়া ও কর্মচারীর বেতন দিতে পারছি না।

এসময় সাইকেল মেকার হাজী বলেন, আমরা দিনমজুর কিছুই পাই না, কাজ করতে নাপারলে নাখেয়েই মারা যাবো এতোটুকুই জানি। আমাদের কথাগুলো সরকারকে বলুন, আর লকডাউন চাই না, আমরা চাই সবকিছুই স্বাভাবিক হোক।

লক্ষ্মী হলের সামনের টি স্টল মালিক শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, মহামারি করোনা আসার আগে আমার এই ক্ষুদ্র স্টলে ৬ জন কর্মচারী কাজ করতো, তাদের প্রত্যেকের মজুরী ছিলো দৈনিক ৪০০ টাকা করে। এখন ২জন কর্মচারী আছে। কাজ না থাকায় বাকীরা এখন বেকার। এই দুইজনকে ২০০ টাকাও মজুরি দিতে পারছি না। পুলিশ এসে ৩ দিন চুলায় পানি দিয়ে গেছে। জেল-জরিমানার ভয়, কাস্টমার নেই, ব্যবসাও নেই। এভাবে লকডাউন চলতে থাকলে বাঁচবো কেমনে?

ক্ষুদ্র ফল বিক্রেতা বুলবুল হাসান বলেন, করোনার আগে ফল বিক্রি করতাম ১০০-১৫০কেজি। এখন ২৫-৩০ কেজিই বিক্রি করতে হিমশিম। তার ওপর ফের পুলিশের দাবড়ানি। কিছুক্ষণ আগে ১৫ কেজি পেঁয়ারা ও ৫ কেজি আম ফেলে দিলাম। এভাবে ১১ দিনে মহাজনের কাছে ঋণী হয়ে গেছি ১৫ হাজার টাকা।

নবাবগঞ্জ বাজারের ব্যাগ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, সত্যি কথা বলতে আমরা এমন এক শ্রেণির লোক না পারি বলতে না পারি সইতে। শুধু পজেশন ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল মাসে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়। একদিনের দোকান ভাড়া ৬০০ টাকা আর বিক্রি ৪০০-৫০০ টাকা। এই চার -পাঁচ শত টাকায় সংসার চালাবো কি, আর দোকান ভাড়া দেই কীভাবে? দোকানে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ব্যাগ ছিল বর্তমানে ৫০-৬০ হাজার টাকা মালামাল আছে। প্রায় ১৬ মাস হতে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ঋণ, এছাড়াও মহাজন পাবে দেড়- দুই লক্ষ টাকা! এখন চালাল খুঁজে পাচ্ছি না, এভাবে লকডাউন চলতে থাকলে নানান চিন্তায় যেকোনো সময় স্ট্রোক করে মারা যেতে পারি। আমি মনে করি, না খেয়ে মরার চেয়ে করোনায় মৃত্যু অধিক শ্রেয়। সরকারের কাছে দাবি আমাদের উদ্ধার করুন। আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আজ চরম বিপাকে।

সাতগাড়া মিস্ত্রিপাড়া পিটিসির মোড় এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে যেখানে ৪ জন কর্মচারী সবসময় কাজ করতো, সেখানে মালিক হয়ে আমি নিজেই কাজ করছি। কারণ দোকান ভাড়া দিতে হবে এবং বাঁচতে হবে। তিনি আরও বলেন, সরকার বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেককিছুই তো দিচ্ছে কিন্তু আমরা অসহায়রা কিছুই পেলাম না।

কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডের এক ড্রাইভার বলেন, পরিবহণ বন্ধ থাকায় আমাদের ডিপার্টমেন্টের সকলের জীবন প্রায় থেমে গেছে। দেশব্যাপী হাজার হাজার ড্রাইভার ও হেলপারের অবস্থা করুণ।

এদিকে শাপলা চত্ত্বরের সেলুন ব্যবসায়ী নুরু বেলা ১২টার দিকে দোকান খুলেন। তিনি বলেন, ভয় ভয় করে ২/৩ ঘন্টা কাজ করি, যা হয় তাতে কোনো কোনোদিন চুলায় আগুন জ্বলে না। যা দু’এক কেজি চালের টাকা বের হয় সেই আশায় দোকান খুলি, বাইরের লোকজন শহরে না ঢুকলে কামাই বাড়বে না। কিসের প্রধানমত্রীর টাকা, আর কিসের অনুদান? জীবনে কিছু পাইনি। সবমিলিয়ে মনে হচ্ছে কেয়ামতের ময়দানে আছি।

খান বহুমুখী মার্কেট শাপলাচত্বরের ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, আমাদের মার্কেট করোনামুক্ত, ৩টার মধ্যে বিক্রি বন্ধ। এমনিতেই বেচা-বিক্রি নাই,ক্রেতা নাই। ভাত পাচ্ছে না বাঙালি, মাছ খাবে কোত্থেকে? মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ৫ সদস্যের সংসারে দিন ৫০০টাকা লাগে অথচ দিন কামাই বের হয় দেড় থেকে দুইশত টাকা। এই পরিস্থিতিতে মাঝে মাঝে মন চাইতেছে চলন্ত গাড়ির নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করি।

নুরপুর এলাকার বাসিন্দা প্যাডেল চালিত রিকশাচালক আসাদুল ইসলাম বলেন, সকালে ভর্তাভাত খেয়ে বের হয়েছি বিকেল ৪টা পর্যন্ত না খেয়ে। পকেটে আছে ২৫ টাকা।

মহানগরীর চারতলা মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা অটোচালক মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ভাড়া নিয়ে অটো চালাই। দিন ৫০০টাকা ইনকাম হয়। করোনাকালে ২৫০ টাকা অটো ভাড়া দিতে হয়। বাকী টাকায় আজকাল কী হয়? দুমুঠো লবণ-ভাতের জন্যই অটো নিয়ে বের হই।কিছুদিন আগে টার্মিনালে ২৬০০ টাকার মামলা খেয়েছি, ওই ভয়ে ভয়ে শাপলা-টার্মিনাল চোর-পুলিশ খেলছি।

নিউজুম্মাপাড়া কলোনীর বাসিন্দা আব্দুল জলিল কাচারি বাজার এলাকার ক্ষুদ্র খিলিপান বিক্রেতা। তিনি বলেন, পান- সিগারেট কেনার টাকা নাই, বিক্রি করবো কী? বর্তমানে দোকান বন্ধ রেখেছি। তহবিল খেয়ে আজ নিঃস্ব। বাড়ীভাড়া দিতে পারছি না। একবেলা চুলায় আগুন জ্বলে, অন্যবেলা নাখেয়ে থাকি।

Share This News:

সর্বশেষ - লাইফ স্টাইল

আপনার জন্য নির্বাচিত
সুন্দরগঞ্জে ৭ জুয়ারী গ্রেফতার

সুন্দরগঞ্জে ৭ জুয়ারী গ্রেফতার

ডোমারে নিমোজখানায় ঐতিহ্যবাহী বৌ মেলা অনুষ্ঠিত

নীলফামারীতে বাস ও ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে ১ শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ১১

নাসিরনগরে মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি ও মুুরুব্বীদেরকে সম্মাননা প্রদান

ডোমারে ২ জুয়ারি আটক, ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১৫ দিনের জেল

প্রকল্পের নামে অর্থের অপচয় করা যাবে না-স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

প্রকল্পের নামে অর্থের অপচয় করা যাবে না-স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

নাসিরনগরে বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস পালিত

মধুপুরে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জরিমানা

পঞ্চগড়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে যুবকের মৃত্যু

মরহুম অ্যাড. মতিয়র রহমান তালুকদার স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট এর উদ্বোধন

ঝিনাইদহে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল, বিপাকে গ্রাহকরা!