মো. ইব্রাহিম খলিল, হোমনা, কুমিল্লা।।
কুমিল্লার হোমনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নাজমুল ইসলাম (১৩) নামে মাদ্রাসা পড়ুয়া এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বাদীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিরাজুল ইসলামকে (৩৩) আসামি করে হোমনা থানায় সড়ক পরিবহণ আইনে মামলা রুজুর অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মামলার আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার সিরাজুল ইসলাম হোমনা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের হোমনা সরকার পাড়ার নূরুল ইসলামের ছেলে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সোমবার (১৮ নভেম্বর ২০২৪খ্রি.) সকাল ১১টার দিকে হোমনা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম পাড়ার মহরম আলী মাস্টারের বাড়ির পাশে হোমনা ডিগ্ৰি কলেজ রোডে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর মায়ের অভিযোগ, এ দুর্ঘটনায় তিনি (বাদী) মামলা করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও পুলিশ নিজ উদ্যোগে মামলাটি দায়ের করেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় নিহত শিশুটির মা নার্গিস আক্তার (৩৬) বাদী হয়ে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। নার্গিস আক্তার কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ফতেহবাদ (জায়মনদের বাড়ী) গ্রামের মো. জমির উদ্দিনের স্ত্রী। বাদী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন- ভিকটিম মৃত নাজমুল ইসলাম (১৩) তার ছেলে। ভিকটিম হোমনা থানাধীন হোমনা ওভারব্রিজের নিচে তার মামাতো ভাইয়ের দোকান চাকুরি করত।
ভিকটিম গত সোমবার (১৮ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি.) বেলা অনুমানিক ১১ টার দিকে দোকান থেকে বাসায় ফেরার পথে হোমনা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিমপাড়া মহরম আলী মাস্টারের বাড়ীর সামনের পাকা রাস্তা পারাপারকালে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশার ধাক্কায় আহত হয়।
সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যায় শিশু নাজমুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশের এসআই মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন লাশের সুরতহাল রির্পোট তৈরি করে লাশ থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
নিহত শিশুর মা নার্গিস আক্তার আরও বলেন, ‘আমার সন্তান দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আমি পুলিশকে খবর দেইনি, মামলাও করতে বলিনি। কারো মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে আসে। আমার ছেলেকে না নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলে পুলিশ আমাকে বলেন, আপনি মামলা না করলেও থানায় নিতে হবে। থানায় নেওয়ার পর ওসি স্যারের সাথে কথা বলে দিয়ে দিব। পরে আমার নিকট থেকে এসআই ফরহাদ সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। কিন্তু আমার নিষেধ সত্ত্বেও আমার ছেলেকে পোস্ট মর্টেম করার জন্য নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে আমাকে ধমকা-ধমকিও করে।’
মামলার বিষয়ে জানতে- বাদীর অভিযোগ সে মামলা করতে চায় নি, এমনকি পুলিশকেও সংবাদ দেয়নি।বাদীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ পুলিশের উদ্যোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী- এমন প্রশ্নের জবাবে হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম ক্রাইম পেট্রোল২৪.কম কে জানান, ‘বাদীর অভিযোগ ছাড়া কি মামলা হয়, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা রুজু করা হয়েছে।মঙ্গলবার অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’