
মো. ইব্রাহিম খলিল, হোমনা, কুমিল্লা।।
কুমিল্লার হোমনা থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা এক নারীর ঝু*লন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে থানার নারী ও শিশুসহায়তা ডেস্কের একটি কক্ষ থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, ওই নারী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আ*ত্মহত্যা করেছেন।
ওই নারীর নাম হামিদা আক্তার ওরফে ববিতা (৩২)। তিনি হোমনা উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামের খলিল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘনিয়ারচর গ্রামের সৌদি প্রবাসী খলিল মিয়া গত এক বছর আগে সৌদি আরবে ববিতাকে বিয়ে করেন এবং গত সাত মাস আগে ববিতা দেশে আসেন এবং গত ৩/৪ মাস যাবত খলিল মিয়ার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। খলিল মিয়া আগেও একটি বিয়ে করেছেন। ওই সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। দুই স্ত্রী আলাদা আলাদা ঘরে বসবাস করে আসছিল।বুধবার সকালে ববিতা তার সতীনের ১১ বছরের ছেলে সায়মনকে ছু*রিকাঘাত করেন। এতে শিশুটির পেটে গুরুতর আঘাত লাগে এবং নাড়িভূুড়ি বের হয়ে আসে। ছেলেকে বাঁচাতে মা কুহিনুর আক্তার এগিয়ে গেলে তাকেও তিনি ছু*রিকাঘাত করে আহত করেন। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ববিতাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ বিকেল পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে বাঁধনমুক্ত করে এবং আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আহত শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আহত সায়মনের চাচা স্বপন মিয়া বাদী হয়ে গতকাল রাতে থানায় একটি মামলা করেন। আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে নারী ও শিশুসহায়তা ডেস্কে থাকা অবস্থায় ববিতা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আ*ত্মহত্যা করেন। পরে পুলিশ সেখান থেকে তার ঝু*লন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
হোমনা-মেঘনা সার্কেল) এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল করিম বলেন, ‘সতীন ও তার ছেলেকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগের মামলায় হামিদা বেগম প্রকাশ ববিতাকে গ্রেফতার করে থানার নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কে রাখা হয়েছিল। সেখানে ওয়ারেন্টভুক্ত একজন নারী আসামী ও তাদের পাহারায় একজন নারী গ্রাম পুলিশ ছিলেন। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ওয়ারেন্টভুক্ত নারী আসামী ও গ্রাম পুলিশ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে এই সময়ের মধ্যেই ববিতা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আ*ত্মহত্যা করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির আ*ত্মহত্যার দায় পুলিশ এড়াতে পারে কিনা? এছাড়া আসামিকে নারী ও শিশুসহায়তা ডেস্কে রাখার কারণেই সেখানে টেবিলের উপর ওঠে ববিতা আ*ত্মহত্যা করার সুযোগ পায়। এটি কি আ*ত্মহত্যার ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেনি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবকিছুই তদন্ত সাপেক্ষে বুঝা যাবে, এর আগে কিছু বলা যাবে না।’
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, ‘আসামির সঙ্গে চার বছরের একটি ছেলে সন্তান থাকায় ববিতাকে রাতে নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কে রাখা হয়েছিল। সেখানে তার সঙ্গে ওয়ারেন্টভুক্ত আরেক নারী আসামি ছিল। আর আসামিদের পাহারায় নারী গ্রাম পুলিশ ছিলেন। ভোরে তারা ওয়াশরুমে গেলে এই ফাঁকে ববিতা ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আ*ত্মহত্যা করেন। সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে এসে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘বুধবার সকালে ববিতা তার সতীনের ১১ বছরের ছেলে সায়মনকে ছু*রিকাঘাত করেন। এতে শিশুটির পেটে গুরুতর আঘাত লাগে এবং নাড়িভূুঁড়ি বের হয়ে আসে। ছেলেকে বাঁচাতে মা কুহিনুর আক্তার এগিয়ে গেলে তাকেও তিনি ছু*রিকাঘাত করে আহত করেন। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ববিতাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে বাঁধনমুক্ত করে এবং তাকে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় আহত শিশুর চাচা স্বপন মিয়া বাদী হয়ে রাতে হোমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।’















