তৌকির আহাম্মেদ হাসু, সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ(টি আর-অর্থ) কর্মসূচির আওতায় সরিষাবাড়ী পৌর সভার অনুকূলে দ্বিতীয় পর্যায়ে নন-সোলার খাতে সাধারণ বরাদ্দের “বাউসী মধ্য পাড়া গোলাপ সুতারের বাড়ী হয়ে বাউসী উত্তরপাড়া মোফাজ্জল সরকারের বাড়ী পর্যন্ত” মাটির রাস্তাটি প্রকল্পের কাজ না করে প্রকল্পের সভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিপ্পন মন্ডল ৪৩ হাজার ৫’শ টাকা অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ এনে প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী ।আজ শনিবার (৪ জুলাই) সকালে সরিষাবাড়ী পৌর সভার বাউসী মধ্য পাড়া গুতু খা’র মোড়ে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় এলাকার সমাজ সেবক আলতাফুর রহমান সভাপতিত্ব করেন।এ সময় বক্তব্য রাখেন-বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী,সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর হক, ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম মাসুদ, সহ সভাপতি এনায়েত হোসেন সবুজ,সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রবিন,সাংগঠনিক সম্পাদক ও আলহাজ জুট মিল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন,প্রচার সম্পাদক তাইফুল ইসলাম, সরিষাবাড়ী পৌর ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, ভাটারা স্কুল এন্ড কলেজের বিএসসি শিক্ষক জিয়াউল হক, সরিষাবাড়ী মাহমুদা সালাম মহিলা কলেজের প্রভাষক সোহেল রানা,জয় পরিষদ পৌর শাখার আইন বিষয়ক সম্পাদক তোতা মিয়া,সমাজ সেবক আব্দুস সামাদ মাস্টার,আব্দুল গনি ফকির,শামছুল হক,খোরশেদ আলম লালু,আমিনুল ইসলাম,নাজমুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রতিবাদ সভাটি পরিচালনা করেন-জয় পরিষদ পৌর শাখার সভাপতি ফয়েজুর রহমান খান।প্রতিবাদ সভা শেষে বাউসী মধ্য পাড়া গোলাপ সুতারের বাড়ী হয়ে বাউসী উত্তরপাড়া মোফাজ্জল সরকারের বাড়ী পর্যন্ত মাটির রাস্তাটি পরিদর্শন করে কোথাও কোন সংস্কারের আলামত না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানান।এ ছাড়াও এলাকাবাসী এ ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি ও পৌর ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিপ্পন মন্ডল বলেন, আমি প্রকল্পের কোন টাকা উত্তোলন করেনি। কে বা কাহারা আমার নামে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে আমি তা জানিনা। টাকা পাইনি, তাই আমি কাজ করতে পারিনি। এ দিকে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ(টি আর-অর্থ) কর্মসূচির আওতায় সরিষাবাড়ী পৌর সভার অনুকূলে দ্বিতীয় পর্যায়ে নন-সোলার খাতে সাধারণ বরাদ্দের প্রকল্প সরেজমিনে ঘুরে লক্ষ্য করা গেছে- পৌর ৯ নং ওয়ার্ডের চর বাঙ্গালী দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৪৩ হাজার ৫’শ টাকা বরাদ্দ করা হলেও প্রকল্পের সভাপতি ও কাউন্সিলর আব্দুল মালেক ১৫ হাজার টাকা পেয়ে মসজিদ কমিটির নিকট জমা দিয়েছেন বলে তিনি স্বীকার করেন। অপর দিকে একই অর্থ বছরের ৭ নং ওয়ার্ডের বাঙ্গালী পাড়া মেইন রোড় হতে তুসর মন্ডলের বাড়ী পর্যন্ত মাটির রাস্তা সংস্কার বাবদ ৪৩ হাজার ৫’শ টাকা বরাদ্দ থাকলেও প্রকল্পের সভাপতি ও কাউন্সিলর আফছার উদ্দিন তার প্রকল্পের বিপরীতে ১৫ হাজার টাকা পেয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।একই অর্থ বছরের“নাওগোলা গ্রামের ফরিদ সাহেবের বাড়ীর সামনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মাটির রাস্তা সংস্কার করণ” বাবদ ৪৩ হাজার ৫’শ টাকা বরাদ্দ থাকলেও প্রকল্পের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর রেনু আক্তার ১২/১৩ হাজার টাকা পেয়েছেন বলে তিনি স্বীকার করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের সভাপতি ও কাউন্সিলর বলেন, একটি সিন্ডিকেট সরকারি বরাদ্দ জনপ্রতিনিধিদেরকে জিম্মি করে সরকারি বিভিন্ন গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষন কর্মসূচির গৃহীত প্রকল্পের বিপরীতে সরকারি বরাদ্দ সম্পূর্ণ না পাওয়ায় আমরা কাজ করতে পারছিনা যার ফলে আমরা জনগণের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছি। উল্লেখ্য, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ(টি আর-অর্থ) কর্মসূচির আওতায় সরিষাবাড়ী পৌর সভার অনুকূলে দ্বিতীয় পর্যায়ে নন-সোলার খাতে সাধারণ বরাদ্দের ১০টি প্রকল্পের ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ৪’শ ৭৩ টাকা ৮৫ পয়সা বরাদ্দ আসে। উক্ত প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ অর্থ বছর শেষ হলেও একটি সিন্ডিকেট প্রকল্পের সভাপতিদেরকে তাদের মন মতো কিছু টাকা দিয়ে অবশিষ্ট টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের সভাপতি ও কাউন্সিলরগণ সাংবাদিকদের বলেন।