
মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলা প্রতিনিধি , রংপুর :
স্বৈরাচার আন্দোলনে শহীদ যুবলীগ কর্মী নুর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তি করায় জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে রংপুর নগরীর কাচারী বাজারে জেলা যুবলীগের আয়োজনে কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর আগে রাঙ্গাকে নুর হোসেনের মায়ের কাছে সশরীরে গিয়ে ক্ষমা চাওয়া ও বাংলাদেশের সমগ্র জাতির কাছে লিখিত ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, উপ-দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাহেলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এতে সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর যুবলীগ সভাপতি এবিএম সিরাজুম মনির বাশার। সঞ্চালনা করেন মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, দেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলনে ১৯৮৭ সালে সেই সময়ের যুবলীগ নেতা নুর হোসেন স্বৈরাচার আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন এবং সেদিন পুলিশের গুলীতে নিহত হন। অথচ সেই দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী নুর হোসেনকে নিয়ে এক সময়ের বাংলা মদের সেলসম্যান ও ব্যবসায়ী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, ক্ষমতালোভী রাঙ্গা কটূক্তি করে গোটা বাংলাদেশের মানুষকে অপমান করেছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার ও গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা বলে, যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে এর জন্য রংপুর আওয়ামী লীগ সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত।
বক্তরা আরও বলেন, জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে রংপুরে প্রবেশ করতে পারবে না। রংপুরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। রংপুরের রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠানো হবে। সেই সাথে রংপুরে রাঙ্গার সকল প্রকার কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এদিকে সকালে নগরীর কাচারীবাজারে স্বৈরাচার আন্দোলনে শহীদ যুবলীগ কর্মী নুর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তি করায় জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাকে রংপুরে অবাঞ্ছিত করে মানববন্ধন করে রংপুর সরকারি কলেজ শাো ছাত্রলীগ।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, সহ-সভাপতি শামীম চৌধুরী, অ্যাড. দিলশাদ মুকুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নওশাদ রশীদ, প্রচার সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিলন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক কামরুজ্জামান শাহীন, ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কাওছার মামুন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল ইসলাম হীরা, রায়হান আহমেদ মানিক, রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি সাফিউর রহমান স্বাধীনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ। এতে সভাপতিত্ব করেন রংপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ শাখার আহবায়ক আল আমিন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সেই সময়ের সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন যুবলীগ নেতা নূর হোসেনসহ নূরুল হুদা বাবু ও ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো। বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক স্বৈরাচার নিপাত যাক’ লিখে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশ নূর হোসেনকে গুলি করে হত্যা। এর পর তিন বছর পর ১৯৯০ সালের শেষ দিকে এরশাদ বিদায় নিতে বাধ্য হন।