মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে ১০ গ্রামের কয়েক হাজার লোক মানববন্ধন করেছে। লক্ষীটারী ইউনিয়নের ইচলী গ্রামে এসকেএস বাজার সংলগ্ন ব্রিজের উপর ও রংপুর হতে বুড়িমারী স্থলবন্দর সড়কে মঙ্গলবার সকালে কয়েক হাজার লোকের দীর্ঘ লাইনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল হাদী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল হোসেন আশরাফী, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী, ইউপি সদস্য আব্দুল মোন্নাফ, ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ তিস্তায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিবর্গ। মানববন্ধনের বক্তারা শেখ হাসিনা সেতু হতে শংকরদহ ও ইচলীচর হয়ে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, তিস্তার পানি আবার বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল স্রোতে জোড়া ব্রিজ ও বুড়িমারী স্থলবন্দর সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রিজের পাশে ব্লক পিচিং বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি হুমকিতে পড়েছে ব্রিজটিসহ বুড়িমারী সড়ক।এ অঞ্চলের মানুষজনের আশঙ্কা, ভাঙন রোধ করা না গেলে যেকোনো সময় ব্রিজ ও সড়ক ভেঙে যাবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে অঞ্চলের বাসিন্দারা। সেইসাথে বুড়িমারী স্থলবন্দরের সাথে রংপুর শহর তথা দেশের যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যাবে। রক্ষা করা যাবেনা শেখ হাসিনা সেতু। এছাড়া এবারের কয়েক দফার ভাঙনে শংকরদহ গ্রামটি বিলীন হয়ে গেছে। পশ্চিম ইচলীর অর্ধেক গ্রাম বিলীন হয়েছে। বিলীন হয়েছে প্রায় ৬ শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি, আশ্রয়ন গ্রাম, আবাদী জমি, গাছ, বাঁশ, ভেঙে গেছে রাস্তা ও বিভিন্ন রাস্তার ব্রিজ। চরের মানুষজনের চলাচল সমস্যাসহ বাড়িভাঙ্গা পরিবারগুলো আশ্রয়হীন হয়ে আছে। হাফেজিয়া মাদরাসা, শংকরদহচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিনবিনা পাকা রাস্তাসহ কয়েকটি পরিবার বিলীন হয়েছে। নির্মিত বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। মানুষজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা কাজে কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ভেঙে যাওয়ার পর তারা লুটপাটে নামমাত্র কাজ করেছে। কাজ শেষ না হতেই বা চলমান থাকায অবস্থায় আবার ভেঙে যায়। তাদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি মানববন্ধনে ঘোষণা দেওয়া হয়। এদিকে রাস্তা ও ব্রিজ রক্ষার্থে গঙ্গাচড়া এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বস্তায় বালু ভরে ভাঙন কবলিত এলাকায় ফেলছে বলে জানান উপসহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহীম খলিল।
উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রুহুল আমিন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে এ প্রতিনিধিকে জানান, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে এলজিইডি ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে তিনি উপজেলা পরিষদ থেকে ব্যবস্থা নিবেন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অবগত করেছেন।