ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক>> চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা এলাকায় নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তিন পুলিশ সদস্যসহ গুরুতর আহত হয়েছেন আরো প্রায় অর্ধ শতাধিক। আহতদের কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ৫ জন হলেন আহমেদ রেজা (১৮), রনি (২২), শুভ (২৪), মো. রাহাত (২২) ও হাবিবুল্লাহ (১৯)। গণ্ডামারাসহ আশেপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজন মারমুখী অবস্থায় সংঘটিত হয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
শনিবার সকালে উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা এলাকায় নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা বেতনভাতার দাবিতে বিক্ষোভ ও রমজান মাসে শ্রমঘণ্টা কমানোর দাবি তুললে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। পরে আহতাবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম ভুইয়া জানান, আহত অবস্থায় ১৫-২০ জন শ্রমিক ও ৩ পুলিশ সদস্যকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেখানকার চিকিৎসকরা আরও এক শ্রমিককে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, বেতন-ভাতা নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলছিল। সকালে ১২ দফা দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছি। পরে আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয় বলে জেনেছি।
স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায়। এতে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক কানিজ ফাতেমা রুম্পা জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মরদেহ আমাদের হাসপাতালে আছে। আহতদের অনেককেই চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শফিউর রহমান মজুমদার বলেন, ৪টি মরদেহ বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। আহতদের অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এপ্রিলে একই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘাতে নিহত হন ছয়জন।