আল মাসুদ, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি ড্রেজার মেশিন বন্ধ করতে হবে, দীর্ঘ আন্দোলনের পর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ড্রিল ড্রেজার মেশিন যখন পুরোপুরি বন্ধ ঠিক তখনই পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদী ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি জেলার প্রায় সব ক’টি নদী খনন করে নদীগুলোতে যখন নাব্যতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে, তখনই দুর্বৃত্তরা নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর নাব্যতা নষ্ট করছে। সরকারের শত শত কোটি টাকা বিফলে যাচ্ছে। ড্রেজার মেশিন ব্যবহারের ফলে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ায় ইতোমধ্যে পরিবর্তন দেখা গেছে। ড্রেজার মেশিনের ফলে নদীর তীরে থাকা ফসলি জমিসহ ভিটেমাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফসলি জমি রক্ষার্থে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন বন্ধের দাবি করেছে এলাকাবাসী। কিন্তু কে শুনে কার কথা, যারা এসবের সাথে জড়িত তারাই সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, তাদের সাথে উঠা বসা রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সাথে।
দেবীগঞ্জ উপজেলায় শাল ডাঙ্গা ইউনিয়নে ধুলা ঝাড়ি, সোনা পাতা করতোয়া নদী থেকে প্রশাসনের কোন অনুমতি বা ইজারা না নিয়েই অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। দেশের সার্বিক ক্ষতি করছে আর রাজস্ব ও হারাচ্ছে সরকার।
উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় কয়েকটি স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও যেন দেখার কেউ নেই। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বালি উত্তোলন করা হলেও বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেয়নি উপজেলা প্রশাসন।
এ ব্যাপারে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রত্যয় হাসান জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী খনন করা হচ্ছে। যদি কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলার ধুলাঝাড়ি,করতোয়া ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে, ময়নামতির চর, দেবীডুবা ইউনিয়নের পাখুড়ি তলাও তেলী পাড়া এলাকায় করতোয়া নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিনরাত ২৪ ঘন্টা বালি উত্তোলন চলছে। বালু উত্তোলনের পর বিক্রির জন্য ট্রাক্টরযোগে পরিবহণের ফলে এলাকার রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বালি উত্তোলনের ফলে এলাকার বেশ কিছু আবাদি জমি ও বসতভিটে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
দেবীগঞ্জ বালুমহলের ইজারাদার রফিকুল খান জানান, ধুলাঝাড়ি, পাখুড়ি তলা, তেলীপাড়ায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করছে, তাই আমি ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করছি।
বালি উত্তোলনের স্থান চিহ্নিত থাকলেও জেলা প্রশাসন কর্তৃক জল মহাল দাগ, খতিয়ান নয়। অনির্ধারিত স্থান হতে বালি উত্তোলন করায় মালিকানাধীন জমির অংশগুলো ভেঙে যাচ্ছে। শীঘ্রই বালি উত্তোলন বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।