
মোঃ জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি।।
প্রেস ব্রিফিং এ অ্যাডিশনাল ডিআইজি, পিবিআই, দিনাজপুর, মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ
দিনাজপুর বিরলের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে রেললাইনের পাশে গত ২২ সেপ্টেম্বর ময়না বেগমের লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি প্রথমে অপমৃত্যু হিসেবে ধরা হলেও, পিবিআই–এর ছায়া তদন্তে উঠে এসেছে মর্মান্তিক এক পরিকল্পিত হ*ত্যাকাণ্ডের চিত্র।
আজ বুধবার সকাল ১১ টায় দিনাজপুর পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজ্জামান আশরাফ।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দিনাজপুর–পঞ্চগড় রেললাইনের পাশে স্থানীয়রা ময়না বেগমের লাশ পড়ে থাকতে দেখলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ ও পিবিআই দিনাজপুরের ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জখমের চিহ্ন, গলায় পেঁচানো নাইলনের দড়ি এবং দড়িটি রেললাইনের স্লিপারে বাঁধা অবস্থাসহ বিভিন্ন আলামত পরীক্ষা করে। এসব তথ্য পর্যালোচনায় দলটির কাছে ঘটনাটি দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে সন্দেহ জাগে।
ঘটনার দিন রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হলেও, পিবিআই দিনাজপুরের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফের নির্দেশে এসআই মোঃ নাজিমুল ইসলামের নেতৃত্বে ছায়া তদন্ত অব্যাহত থাকে। তথ্য–প্রযুক্তি বিশ্লেষণ ও সংগ্রহ করা তথ্য প্রমাণে নিশ্চিত হওয়া যায়—ময়না বেগমকে হত্যা করে রেল দুর্ঘটনার ছদ্মবেশে সাজানোর জন্য লাশ রেললাইনের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল।
পরে, গত ২ নভেম্বর ময়নার বাবা লাল মিয়া রেলওয়ে থানায় মেয়ের স্বামী জাহিদুল ইসলামসহ তিনজনকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৪–৫ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে পিবিআই নিজ উদ্যোগে এটি অধিগ্রহণ করে এবং এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ নাজিমুল ইসলামকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়।
তদন্তের ধারাবাহিকতায় একই দিনে পিবিআই দল কোতয়ালী থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে তিন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে মূল অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম স্বীকার করে যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে ধার–কর্জ ও সুদের টাকা নেওয়া নিয়ে প্রায়ই দ্বন্দ্ব হতো। বিদ্যুত বিলের ২ হাজার টাকা জোগাড় করতে না পারায় ঘটনার দিন বিকেলে সে স্ত্রীকে মারধর করে। পরে রাত অনুমান ৯টা ৫০ মিনিটে জাহিদুল তার ভায়রা আব্দুস সালাম ও চাচাত ভাই রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে ময়নাকে রেললাইনে নিয়ে যায় এবং নাইলনের দড়ি পেঁচিয়ে তাকে শ্বা*সরোধে হত্যা করে। পরে লাশ কাশিয়াখাস দিয়ে ঢেকে রেখে ও লাইনের স্লিপারে বেঁধে ঘটনাটিকে রেল দুর্ঘটনায় পরিণত করার চেষ্টা করা হয়।


















