
আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় অপহরণ করে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগে অপহরণকারীসহ নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) কে গ্রেফতার করেছে ডোমার থানা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন, উপজেলার খাটুরিয়া এলাকার মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে মানিক ইসলাম (৩২) ও খাটুরিয়া সেন্টারপাড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী হাবিবুর রহমান (৬০)। ছাত্রীটির বাবা ডোমার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ডোমার বালিকা বিদ্যা নিকেতনের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৪) কে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় কয়েক মাস হতে উত্ত্যক্ত করে ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রী ৩ সন্তানের জনক মানিক ইসলাম। গত ২৮ মে ছাত্রীটি তার খালার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় উপজেলার পাঙ্গামটুকপুর ইউনিয়নের মেলাপাঙ্গা এলাকায় দুপুর ২ টার দিকে মানিক তাকে অপহরণ করে মোটরসাইকেলযোগে নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী হাবিবুর রহমানের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে মেয়েটিকে জোর করে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার হাবিবুর রহমান কাজী বলে, আজ থেকে তোমরা স্বামী-স্ত্রী। মানিক নাবালিকা মেয়েটিকে বিভিন্ন হুমকি ও ভয় দেখিয়ে বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করতে নিষেধ করে। এরপর তাকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন স্থানে ও আত্মীয়ের বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার জোর করে ধর্ষণ করে। গত সোমবার (১৫ জুন) বিকালে মেয়েটি তার নানা বাড়ি যাওয়ার সময় পাঙ্গা মটকপুর ইউনিয়নের মুছার মোড়ে আবারো তাকে মানিক জোর করে মোটরসাইকেলে উঠানোর চেষ্টা করে। এসময় নাবালিকা মেয়েটির চিৎকারে ওই এলাকার লোকজন তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়। ডোমার থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেয়েটিকে উদ্ধারসহ মানিককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় মানিকের স্বীকিারোক্তি অনুযায়ী রাত ৮টায় নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) হাবিবুর রহমানকে তার নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ আটক করে। পরদিন মঙ্গলবার (১৬ জুন) মেয়েটির বাবা বাবলু ইসলাম বাদী হয়ে ডোমার থানায় ৭/৩০, ৯ (১) ধারায় মামলা নং- ০৭, তারিখ- ১৬/০৮/২০ইং দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
ডোমার থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গোপনে কিছু নিকাহ রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে শিশু বিবাহ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।