
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে আপন বড় ভাই এর ছেলে ও সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় ছোট ভাই আহত হয়। হামলার শিকার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। সেই অপরাধে আসামীরা জামিন নিয়ে বাড়ী ফিরেই ছোট ভাইয়ের পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাড়ী ছাড়া করেছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। প্রাণভয়ে বাদীর পরিবার ১০দিন যাবৎ বাড়ি ছাড়া রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মধুহাটী ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মৃত জয়নুদ্দীন মন্ডলের তিন ছেলের মধ্যে মজিদ ছোট ছেলে। বিদেশ থেকে কিছু টাকা আয় করে গ্রামে আলাদাভাবে বাড়ীঘর তৈরি করে বসবাস করতে চায় কিন্তু অন্য দুই ভাই সেটা মানতে নারাজ। সে কারণে তারা বার বার ছোট ভাইয়ের নিকট চাঁদা দাবি করে জোর করে টাকা আদায় করার চেষ্টা করে। এনিয়ে চার দফা মজিদকে মারধর করেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিচার সালিশের মাধ্যমে বারবার সমাধান হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৩ মে এ পারিবারিক কলহের জের ধরেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মজিদের আপন বড় ভাই অজগর ও আজিজের ছেলে রুবেল ও তার মামা রাহেন দলবল বাড়িতে নিয়ে মজিদের উপর হামলা করে। এই হামলায় আহত হয়ে গুরতর অবস্থায় পুলিশের হস্তক্ষেপে মজিদকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এবং তার স্ত্রী বুলু বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় বড় ভাই আজগর, আজিজ, ভাস্তে রুবেল ও রাহেনসহ ৬জনের বিরদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা এবং লুটপাটের মামলা করে। এই ঘটনায় দুই জন আসামী পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও কয়েকদিন পরে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে তারা জামিন নিয়ে আসে। মামলার আসামীরা জামিন পেয়ে বাড়ী ফিরে এসেই বাদীকে নানাভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং মাঠের মেহগনি গাছ, কাঁঠাল গাছ ,পুকুরের মাছধরা একটি মেশিন, টেবিলের ড্রয়ার থেকে কিছু টাকা লুটপাটসহ নানামুখী অত্যাচার বাড়িয়ে দেয়। এই অত্যাচারের কারণে মজিদ ও তার পরিবার ১০দিন যাবৎ বাড়ি ছাড়া রয়েছে। মজিদ সদর থানায় ওইসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আবারও একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু তার দাবি এই অভিযোগের তদন্ত ভার বাজার গোপালপুর স্থানীয় ক্যাম্প ইনচার্জকে দেওয়ায় তিনি উভয় পক্ষের নিকট থেকে উৎকোচ গ্রহণ করে কোন কার্যকর পদেক্ষেপ গ্রহণ করছেন না। মজিদের তিন বোন তারাও তার ভাইকে বড় দুই ভাই অত্যাচার করে গ্রাম ছাড়া করার চেষ্টা করছে বলে জানান।
মামলার আসামী মেজ ভাই আজিজ বলেন, একটু ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে সামান্য ঘটনা ঘটছিল এনিয়ে থানায় মামলা পর্যন্ত গড়াবে তা আমাদের জানা ছিলনা। আর কোন সমস্যা হবে না, তাকে বাড়ি আনার ব্যবস্থা করছি।
এ বিষয়ে বাজার গোপালপুর ক্যাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন ,আমি বিষয়টি তদন্ত করেছি ভাই-ভাইয়ের ব্যাপার আমি মজিদকে ফাঁড়িতে আসতে বলেছি। সে আমার সাথে দেখা করলেই বিষয়টি মীমাংসার হয়ে যেত এবং আমি তার বাড়ীতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করতাম।
মধুহাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ জুয়েল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি আগেও একবার এদের নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়েছে। আমি দ্রুতই পরিষদে দুই পক্ষকে ডেকে সমাধানের ব্যবস্থা করব।