মিজানুর রহমান, শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতীতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা।
দেশব্যাপী বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। সর্বত্রই শীতে জবুথবু অবস্থা। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে অস্বস্তিতে পড়েছে অল্প আয়ের মানুষগুলো।তাই উষ্ণতা পেতে তারা ঝুঁকেছেন পুরাতন কাপড়ের দিকে।
শেরপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে পুরাতন গরম কাপড়ের ব্যবসাটা বেশ জমজমাট।
গত কয়েক দিনে শেরপুর সদর, ঝিনাইগাতী, বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন কাপড় বিক্রির ধুম পড়েছে।বিশেষকরে এর ক্রেতা হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। বিভিন্ন রিক্সা বা ভ্যানচালক, বিভিন্ন শ্রমিকরা এই কাপড় কিনে নিজেদের উষ্ণ রাখার চেষ্টা করছেন।
পুরাতন কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন এই সেক্টরের ব্যবসায়ীরাও। বেচা-কেনা আগের চেয়ে বৃদ্ধির কারণে বেশ স্বস্তিতে আছেন ব্যবসায়ীরা। শীতের এমন তীব্রতায় অত্যন্ত প্রয়োজন একটি গরম কাপড়। সচ্ছল মানুষের মধ্যে একটু ভালো বা নতুন ডিজাইনের পোশাক কেনা হলেও নিম্ন আয়ের মানুষের অনেক ক্ষেত্রে তা হয় না।
তাদের কাছে শীত উপশম করাই মুখ্য বিষয়। কাপড়ের মান বা দাম বলে কিছু নেই। যতো অল্পতে ভাল কাপড় তারা কিনতে পারে সেদিকেই ছুটে।
সেই হিসেবে শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে বিভিন্ন ফুটপাতে বিক্রি হওয়া কাপড়ই তাদের প্রধান লক্ষ্য। ফুটপাতে অনেক ভাল কাপড় বিক্রি হলেও দাম নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে বেশি হওয়ার কারণে একটু সস্তায় তারা কিনে থাকেন পুরনো কাপড়।
ঝিনাইগাতী ধান হাটির মোড়,অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটের সামনে বা মোড়ে এই ধরনের কাপড় বিক্রি করতে দেখা গেছে। নগরীর বিভিন স্থানে পুরাতন কাপড়ের মধ্যে সোয়েটার, জ্যাকেট, কম্বল, গরম টুপি, ছোট ও বড়দের ব্লেজার, বিভিন্ন ডিজাইনের মাফলার বিক্রি করতে দেখা গেছে।দামও খুব সাধ্যের মধ্যে। বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট, ১০০ থেকে ২০০, ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন মোটা গেঞ্জি, সোয়েটার, চাদর পাওয়া যায় ১০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যেই।
ঝিনাইগাতীর ধানহাটির ভাসমান রফিকুল ইসলাম,রাকিবুল হাসান,রিপন বিক্রেতা বলেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি মার্কেট থেকে ও বাসা থেকে সংগ্রহ করে ধুয়ে বিক্রি করি। বিভিন্ন হকার রিক্সাচালক যাদের আয় কম তারাই কিনে থাকে। এসব কাপড় পুরনো হলেও বেশ আরামদায়ক।’
বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাত জুড়ে গরম কাপড়ের ব্যবসা জমজমাট। নতুন নতুন বাহারি ডিজাইনের গরম কাপড়ের সাথে হরহামেশাই বিক্রি হচ্ছে পুরনো কাপড়।
ক্রেতা পেশায় রিকশা চালক তিনি বলেন, ‘কাপড়ে আর ভাল মন্দ কী, সস্তায় এর চেয়ে ভালো পাওয়া যায় না।’
বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এইসব পোশাক কিনতে প্রতি পিস খরচ হয় মানভেদে ৫০ থেকে ১০০টাকা। আমরা প্রতি কাপড়ে ২০থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত লাভ করে থাকি। অনেক সময় পুরাতন কাপড় কিনে ওয়াশ করতে হয়।’
দেশের বিভিন্ন জায়গায়ও বসে থাকে এই পুরাতন কাপড়ের হাট। রাজধানী থেকে কাপড় কিনে তারা গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করে থাকে।