মোহাম্মদ আবদুর রউফ, করিমগঞ্জ (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন কাদিরজঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. ওমর কাইয়ূম। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে করিমগঞ্জ থানায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে হ’ত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া মামলায় ২৬০-২৭০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি মুজিবুল হক চুন্নু ছাড়াও নির্দেশদাতা হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক, জাপা মহাসচিবের সাবেক এপিএস আমিরুল ইসলাম খান বাবলু, সুতারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন মিয়া, করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ ডিজিল্যাবের পরিচালক ও আওয়ামী লীগ নেতা আ.ন.ম নৌশাদ খানকেও এ ঘটনায় অর্থনৈতিক সহায়তা ও নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
বাদী এজহারে উল্লেখ করেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আ’গ্নেয়াস্ত্র, শ’র্টগান ও দেশীয় অ’স্ত্র নিয়ে নগ্ন হা’মলা চালায়। এতে শতাধিক সাধারণ ছাত্র ও বিএনপির নেতাকর্মী আ’হত হন।
পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলাম সজল সরকার, সরকার বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ক’লঙ্কজনক একটি দিন। এদিন আমাদের ভাই-বোনদের ওপর ন্যক্কারজনক হা’মলা করা হয়, তাদের শ্লী’লতাহানি করা হয়। আমরা মনে করি, এর বিচার হওয়া উচিত। সেজন্য হা’মলাকারী ও হুকুমদাতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে মামলা করতে দেরি হয়েছে। এই মামলা আরও আগে করা দরকার ছিল।’
‘মুজিবুল হক চুন্নুকে প্রধান আসামি করে মামলার করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ‘মামলায় দুই-পাঁচ নম্বর আসামি যাদেরকে করা হয়েছে, তারা সরাসরি হা’মলায় উস্কানি দিয়েছেন। ছয় থেকে দশ নম্বর আসামিরা সরাসরি হা’মলা চালিয়েছে।’
উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন খান পল্টু বলেন, ‘স্বাধীনতার পর কিশোরগঞ্জ-৩ আসনটি বিএনপিকে উপহার দিয়েছিলেন এশিয়ার বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. এম ওসমান ফারুক, যিনি একজন সৎ ও যোগ্য রাজনীতিবিদ। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের কারণে মিথ্যা মামলায় ড. ফারুককে দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটাতে হয়েছে। আজ আমরা একটি মামলার মাধ্যমে যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি, আশা করি তা সারাদেশে চলমান থাকবে। আমরা দ্রুত বিচার চাই এবং ছাত্রলীগকে স’ন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী হিসেবে দেখছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র সমাজ প্রস্তুত রয়েছে রাজপথে স’ন্ত্রাসী স্লোগান দেওয়ার সাহস দেখানো সংগঠনগুলোকে প্রতিহত করতে। আমাদের বিপ্লব তখনই সফল হবে, যখন ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশ থেকে চিরতরে নির্মূল হবে এবং কেউ যেন আর দেশের মাটিকে স’ন্ত্রাসের জন্য ব্যবহার করতে না পারে—এই দাবি আমরা তুলছি।’