আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা মহাজোটের
মো. ইব্রাহিম খলিলঃ
এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে সারা দেশ থেকে আসা হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির সাথে আজ ১৪তম দিন থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসায় চরমভাবে ক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারীরা। সেকারণে মহাজোট নেতৃবৃন্দ আগামী ৯ মার্চ হতে ১৪ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন, ১২ ও ১৩ সার্চ দেশব্যাপী সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ ঘণ্টার কর্মবিরতি এবং ১৫ মার্চ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
গত ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রি. থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে।
আজ বৃহস্পতিবার, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মহাজোটের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দিন ও সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন আহমদ মহাজোট ঘোষিত ১২ এবং ১৩ মার্চ দেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সকল শিক্ষক -কর্মচারীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তারা এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বিরাজমান বৈষম্য তুলে ধরে বলেন, ‘সরকারি- বেসরকারি শিক্ষকদের যোগ্যতা, শিক্ষাক্রম ও কর্মঘণ্টাসহ সকল দায়-দায়িত্ব একই রকম হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশের এমপিওভুক্ত প্রায় ৫ লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাঝে বিরাজমান বৈষম্যগুলো হলো- সরকারি শিক্ষকরা বাড়ি ভাড়া পান মূলবেতনের ৪০-৫০% আর এমপিওভুক্ত বে শিক্ষকরা পান মাত্র ১ হাজার টাকা, সরকারি শিক্ষকরা মূলবেতনের সমপরিমাণ দু’টি উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পান মূলবেতনের ২৫%, সরকারি শিক্ষকরা চিকিৎসা ভাতা পান ১ হাজার ৫শ’ টাকা আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পান মাত্র ৫শ’ টাকা। এছাড়াও, সরকারি শিক্ষকদের রয়েছে বদলি, পদোন্নতি ও পেনশন সুবিধা। অথচ এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমরা অনতিবিলম্বে এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণার মাধ্যমে সকল শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সকল বৈষম্য দূরীভূত হবে সে প্রত্যাশা করছি।’
মহাজোটের যুগ্ম-আহ্বায়ক-১ অধ্যক্ষ মো. দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ১৪ দিন ধরে প্রেসক্লাবের ধুলোবালিতে পড়ে থাকা শিক্ষকদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর না নেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। মনে হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অভিভাবকহীন। তিনি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আজকের কর্মসূচিতে অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন মো. রফিকুল ইসলাম, আবু রায়হান, মো. শাহ আলম, মো. জহিরুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার, মতিউর রহমান দুলাল, আফজালুর রশিদ, আয়নুল হক মন্ডল, বিপ্লব কান্তি দাস, রুহুল আমীন, মো. মামুনুর রশিদ, শেখ আব্দুর রহমান, ফরিদ উদ্দিন ও ঝর্ণা বিশ্বাস, মামুনুর রশিদ, আবুল বাশার নাদিম মো. আব্দুল হাই, তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক নেতারা বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলন, সভা-সমাবেশ ও কুটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েও কোনো প্রকার সুফল না পাওয়ায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. তারিখ থেকে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সারা দেশের শিক্ষকদের নিয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে। আজ কর্মসূচির ১৪তম দিনেও এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে সারাদেশ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেছেন। দিন বাড়ার সাথে সাথে শিক্ষকদের উপস্থিতিও বাড়ছে।
