মো. ইব্রাহিম খলিল, হোমনা, কুমিল্লা>> কুমিল্লার হোমনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আজগর আলী এক অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।বুধবার তার অফিসে আসা সাহায্য প্রার্থীর আকুতি দেখে তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্যের ব্যবস্থা করে দেন ইউএনও ।
এভাবেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তার ফেসবুক টাইম লাইনে বর্ণনা করেছেন- অফিস কক্ষ থেকে দরজা ঠেলে বের হতেই দেখি ২ জন বয়স্ক লোক বারান্দায় মেঝের উপর বসে অপেক্ষা করতেছে! জিজ্ঞেস করলাম- কার কাছে এসেছেন?
পুরুষ লোকটি বলল- স্যারের সাথে দেখা করতে এসেছি।
বললাম – কি সমস্যা, কি বিষয়?
পুরুষ লোকটি পেটে হাত দিয়ে কাতর কন্ঠে বলল- জটিল রোগে ভুগতেছি, পেটে অপারেশন করতে হবে, কিন্তু কোন টাকা নেই, কিছু আর্থিক সাহায্যের জন্য আপনার কাছে এসেছি স্যার!
দু’জনকেই ভিতরে নিয়ে গিয়ে বসালাম, বললাম – ইউএনও’র কাছেতো কোন আর্থিক সাহায্যের বরাদ্দ নেই, আপনাদের কে পাঠিয়েছে?
– সবাই বলে ইউএনও স্যারের কাছে গেলে নাকি সাহায্য পাওয়া যাবে, তাই এসেছি!
নিজেকে অসহায় বোধ করলাম, কারণ প্রায় প্রতিদিনই এরকম অনেক অসহায় লোক আর্থিক সাহায্যের জন্য আসে, কিন্তু সরকারতো আমাদের কাছে এরকম আর্থিক সাহায্যের কোন বরাদ্দই দেয়না!!!
বাড়ী কোথায় জিজ্ঞেস করলাম, বলল- বাঞ্ছারামপুর, এখানে ঘাঘুটিয়া ইউনিয়নে শ্বশুর বাড়ীতে থাকে, কোন ছেলেমেয়ে নেই। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম চিনে কিনা, চেয়ারম্যান মেম্বারের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানালো-তাদের কথা সঠিক, অসহায় পরিবার!!!
মহিলাটিকে(যার বাড়ী হোমনা) তাকে বললাম – মানবিক সাহায্যের একটা আবেদন করেন।
পিআইও সাহেবকে ডেকে নিয়ে বললাম- আবেদনটা রাখেন, আর মানবিক সহায়তার টিন বরাদ্দ থেকে ১ বান্ডিল টিন আর ৩ হাজার টাকার চেকসহ ফাইল নিয়ে আসেন। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মহোদয়কে ফোন করে তার অপারেশনের কথা বলার সাথে সাথে উনি অসুস্থতার কাগজপত্রসহ পাঠিয়ে দিতে বললেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাহেবকে ফোন করে তার ঔষধপত্রের ব্যবস্থা করতে বললাম (সমাজসেবা অফিসে এ সংক্রান্ত একটা বরাদ্দ আছে)।
পিআইও সাহেব দ্রুত ফাইল প্রস্তুত করে চেকসহ নিয়ে আসলেন, চেক সই করে স্বামীর হাতে তুলে দেয়ার পর স্ত্রীর চোখে কৃতজ্ঞতার যে চাহনি দেখলাম- এটাই আমার পরিতৃপ্তি!!! এটাই আমার চাকুরির সার্থকতা!!!