জিততে হলে করতে হতো পাহাড়সম ১৮৫ রান । বিপিএলের এবারের আসরে রান তাড়া করে ঠিক আগের ম্যাচে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৫১ রান করে জয় পেয়েছিল চিটাগং ভাইকিংস। সেই জয়টাও এসেছিল সুপার ওভারে গিয়ে। বিপিএলের ইতিহাসেই ১৮০ বা তার বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিল মোটে পাঁচটি। তাই ১৮৫ রান করে চিটাগং ম্যাচটা জিতবে, ইনিংস বিরতির সময় এমন বাজি ধরার লোক সম্ভবত সংখ্যায় কমই ছিল। এর আগে ২০১৬ মৌসুমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে নিজেদের রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৮৪ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল চিটাগং ভাইকিংস।
একই প্রতিপক্ষকে পেয়ে তিন বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আবারও শেষ ওভারে এসে রোমাঞ্চকর জয় পেল চিটাগং। তবে এবার জয়ের নায়ক হয়ে চিত্রপটে এলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। বড় স্কোর তাড়া করতে নেমে ৫.২ ওভারে ৫৮ রান তুলতে ওপেনার ক্যামেরন ডেলপোর্ট ফিরে যান। ঠিক দুই ওভার পরে আর মাত্র ছয় রান যোগ হতে এ ম্যাচে কুমিল্লার ব্যাটিং হিরো থিসারা পেরেরার বলে সম্ভাবনাময় ইয়াসির আলী আউট হয়ে যান। ঠিক পরের বলেই চার নম্বরে নামা মুশফিক উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ দেন। কিন্তু পাড়ার খেলোয়াড়সুলভ ভুলে ক্যাচ ছেড়ে মুশফিককে সেই বলে চার উপহার দেন কুমিল্লার উইকেটরক্ষক এনামুল হক বিজয়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি ‘মি. ডিপেনডেবল’কে।
দলীয় ৭০ রানে মারকুটে মোহাম্মদ শেহজাদ ও চতুর্দশ ওভারে ১১৭ রানে নাজিবুল্লাহ জাদরান আউট হয়ে যান। ৩৯ বল থেকে তখন ৬৮ রান করার দুরুহ চ্যালেঞ্জ চিটাগংয়ের সামনে। এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে ছোটখাটো গড়নের মুশফিক যেন রোমান গ্ল্যাডিয়েটর বনে গেলেন। সাইফুদ্দিনের করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে লং অনে তামিম ইকবালকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশি। জয় থেকে তখন ছয় বল থেকে মাত্র ৭ রানের দূরত্বে দাঁড়িয়ে ভাইকিংসরা। ততক্ষণে ৪১ বল থেকে সাতটি বাউন্ডারি আর চারটি ছক্কায় ৭৫ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে ফেলেছেন তিনি।
থিসারা পেরেরার করা ত্রয়োদশ ওভারে নিয়েছেন ২১ রান। সাইফুদ্দিন ও আবু হায়দার রনির করা সপ্তদশ ও অষ্টাদশ ওভারে নিয়েছেন ১৫ ও ১৪ রান করে। আর মহা গুরুত্বপূর্ণ ১৯তম ওভারে ১৭ রান তুলে মুশফিক প্রায় একা জয়ের বন্দরে ভিড়িয়েছেন দলকে। শেষ ওভারে ফ্রাইলিংক অবশিষ্ট কাজটুকু সারেন। চিটাগংয়ের পক্ষে আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ২৭ বলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন। তবে অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মুশি।
এর আগে থিসারা পেরেরার ২৬ বলে আট ছক্কায় সাজানো ৭৪ রানের টর্নেডো ইনিংসে ধুঁকতে থাকা কুমিল্লা ১৮৪ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে। এই জয়ের ফলে চার ম্যাচে তিন জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে উঠে এলো মুশফিকের দল।