মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার মণ্ডপ গুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। নির্বাচনী বছর হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এই উপজেলার সব পূজা মণ্ডপে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিগত সময়ে এই উপজেলার একাধিক মণ্ডপে প্রতিমা ভাং’চুরের ঘটনা ঘটেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে কোনো ধরণের অ’প্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, এই বছর ঘোড়াঘাটে ৩৯টি মণ্ডপে পূজা অর্চনা হবে। যা গত বছরের তুলনায় তিনটি বেশি। তারমধ্যে শুধু ৩নং সিংড়া ইউনিয়নে ১৮টি এবং পৌরসভায় ১২টি পূজা মন্ডপ রয়েছে। এছাড়াও ১নং বুলাকীপুর ইউনিয়নে ৬টি এবং ২নং পালশা ইউনিয়নে ২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই ৩৯টি মণ্ডপের সব কয়টিতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মণ্ডপ কমিটির হাতে এসব বিশেষ সিসি ক্যামেরা তুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকরা এখন থেকেই দায়িত্ব পালন করছে। যাতে করে প্রতিমা ভাং’চুরের ঘটনা না ঘটে। এবারের দুর্গাপূজায় সব মণ্ডপে থাকবে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে থেকে পোশাকধারী পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি পূজার শৃঙ্খলা রক্ষায় মণ্ডপ কমিটির কর্তৃক নির্বাচিত স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করবে বলে নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার ওসি।
৩৯টি মণ্ডপের মধ্যে বিশেষ কিছু দিক বিবেচনায় চারটি মণ্ডপকে ঝুঁ’কিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ঝুঁ’কিপূর্ণ মণ্ডপ গুলো হলো ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বড়গলি (আমাগান) সার্বজনীন ইউনিয়নের রানীগঞ্জ বাজার সার্বজনীন দূর্গা মন্দির ও বিরাহীমপুর সার্বজনীন দূর্গা মন্দির। এ বছর দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ শেষ করতে এই উপজেলার সবগুলো পূজা মন্দিরের কমিটির সাথে পৃথক পৃথকভাবে উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ বৈঠক করেছে।
এতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট দিনে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়াসহ আগে থেকেই স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে প্রতিমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।
ঘোড়াঘাট উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাওয়া সিসি ক্যামেরা আমরা সবগুলো মণ্ডপে স্থাপন করেছি। এছাড়াও বড় মণ্ডপগুলোতে আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ক্যামেরা লাগানো আছে। আমাদের সব কয়টি মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকা থানায় জমা দিয়েছি। প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের তুলনায় ভালো। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্দিষ্ট দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে এই উৎসব শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় আমরা সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ঝুঁ’কিপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে আমাদের আরো বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ইতোমধ্যে আমরা সব গুলো মন্দির পরিদর্শন করেছি। আমাদের বিট অফিসাররা মণ্ডপের সার্বিক বিষয় খোঁজখবর রাখছে। পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে আমরা এবং আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন ।’