মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
কিছুদিনের প্রেম। এরপর পরিবারের অসম্মতিতে ঘোড়াঘাট পৌরসভার নয়াপাড়া এলাকার মৃত আকবর হোসেনের ছেলে লাইম মিয়া ওরফে নাহিদকে (২০) পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন কিশোরী সাদিয়া আক্তার সাথী (১৩)। তবে বিয়ের পর সেই প্রেম আর মধুর হয়নি। বিয়ের পর থেকেই যৌ’তুকের জন্য তাকে নি’র্যাতন করতে থাকেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন। ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার ৪ লাখ টাকা যৌ’তুকের দাবিতে সাথীকে মা’রপিট করে তার স্বামী ও শাশুড়ি। তবে সাথী তার বাবার পরিবারের কাছে থেকে যৌ’তুকের টাকা নিয়ে আসতে অপারগতা প্রকাশ করে। বুধবার ভোর বেলা সাথীর পরিবার জানতে পারেন তাদের মেয়ে বিষ জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে মারা গেছেন।
খবর পেয়ে বুধবার সকালে থানা পুলিশ শ্বশুর বাড়ি থেকে নিহত সাথীর ম’রদেহ উদ্ধার করে এবং স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে। নিহত সাদিয়া আক্তার সাথী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তল্লাপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের মেয়ে। এ ঘটনায় নিহত সাথীর বাবা বাদী হয়ে বুধবার সকালে থানায় একটি হ’ত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় সাথীর স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার দুজন হলেন, নিহত সাথীর স্বামী দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের মৃত আকবর হোসেনের ছেলে লাইম মিয়া ওরফে নাহিদ (২০) এবং শাশুড়ি লাকি বেগম (৪০)।
মামলায় বলা হয়, ৩-৪ মাস আগে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে সাথীকে বিয়ে করে নাহিদ। মঙ্গলবার দিনের বেলা যৌতুকের দাবিতে সাথীকে মা’রপিট করার পর রাতে তার স্বামী সাথীকে ঘুম থেকে উঠিয়ে মুখে বিষ জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট ঢুকিয়ে দেয় এবং ঘটনা অন্যদিকে নিয়ে যেতে শ্বশুর বাড়ির লোকজনই তাকে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্যা কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তবে সেখানেই সাথীর মৃ’ত্যু হয়।
মামলার বাদী নিহত সাথীর বাবা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘যৌতুকের জন্য পরিকল্পিত ভাবে আমার মেয়েকে হ’ত্যা করা হয়েছে। আমার জামাতা ইত:পূর্বে দুটি বিয়ে করেছিলো। যৌতুকের কারণে মা’রপিট করায় সেই দু’জন চলে গিয়েছে। আমি হ’ত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্যা কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: নুরে আজমির ঝিলিক বলেন, ‘অচেতন অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল। অবস্থা আ’শঙ্কাজনক হওয়ায় আমরা রোগীকে দিনাজপুর মেডিকেলে রেফার্ড করি।’
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য ম’রদেহ দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার নিহতের স্বামী ও শাশুড়িকে বুধবার বিকেলে দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে।’