সম্পাদকীয়
বাংলাদেশ একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। এদেশের অধিকাংশ মানুষই মুসলিম। আর মুসলিমদের সর্বপ্রথম কর্তব্য হল তাদের সন্তানদের আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। অর্থাৎ নামাজ-কালাম শিক্ষা দেওয়া। আর তা না করলে অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট একদিন কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। তাছাড়া হালাল- হারাম সম্পর্কে ধারনা লাভ, সৎ পথে চলা ও দুর্নীতির হাত থেকে নিজেকে হেফাযত করতেও মক্তবের পড়ার বিকল্প নেই। দু:খজনক হলেও সত্য, বর্তমানে আমাদের সন্তানেরা এসব জ্ঞানার্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে বড় হয়ে কর্মক্ষেত্রে গিয়েও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করছে এবং নৈতিকতার অবক্ষয় হচ্ছে। এমনও দেখা গেছে, উচ্চ শিক্ষিত প্রতিষ্ঠিত ছেলে-মেয়েরাও পিতা-মাতাকে তাদের বৃদ্ধ বয়সে যে সেবা-যত্ন করার কথা তা নাকরে বরং তাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসছে। এতে করে দিন দিন মানুষের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে ও সামজিক মূল্যবোধ হ্রাস পাচ্ছে। পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রযন্ত্রেও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। এই অবস্থা সৃষ্টির জন্য মক্তবের শিক্ষার অভাব অর্থাৎ সঠিক ধর্মীয় শিক্ষার অনুপস্থিতিই দায়ী বলে আমরা মনে করছি।
কারণ মক্তবের পড়া সাধারণত ফজর নামাজ পড়ার কিছু সময় পরই শুরু হয়ে থাকে। এদিকে দেশে বিরাজমান কিণ্ডারগার্টেনগুলোও তাদের পাঠদানের উপযুক্ত সময় হিসেবে এই সময়টিকেই বেছে নিয়েছে যা মক্তবের পড়ার সাথে সাংঘর্ষিক। ফলে অভিভাবকরাও মক্তবের আরবি পড়াকে তুচ্ছ মনে করে তা বর্জন করছে এবং তাদের সন্তানদের কিণ্ডারগার্টেনে পাঠানোর তীব্র প্রতিযোগিতায় মত্ত রযেছে। এতে করে মক্তবের আরবি পড়া দিন দিন বিলুপ্ত হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মুসলমানের সন্তানেরা একদিন অসহায় পিতা-মাতার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সামান্য দোয়া করার যোগ্যতাটুকুও হারিয়ে ফেলবে। আর মানুষ মৃত্যুর পর তাদের আওলাদের কাছে এমনটিই প্রত্যাশা করে। তাই এই অবস্থা থেকে মুসলিম শিশুদের রক্ষা করতে হবে এবং মক্তবের পড়া নিশ্চিত করতে হবে। তা নাহলে এর দায় একদিন কেউ এড়াতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট সকলকেই মহান সৃষ্টিকর্তার আদালতে জবাবদিহি করতে হবে।
তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত জরুরি ভিত্তিতে সারা দেশের কিণ্ডারগার্টেনগুলোর সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা এবং মক্তবের আরবি পড়া নিশ্চিত করা। আর সঠিক ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমেই গড়ে উঠতে পারে একটি সুস্থ, সুন্দর, সভ্য, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিমুক্ত ও সমৃদ্ধ জাতি।