ঝিনাইদহ প্রতিনিধি>>
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন শাহাদতকে পুলিশ স্টেশন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ১ ঘন্টা রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ করা হচ্ছে কোন কারণ ছাড়াই কালীগঞ্জ থানা পুলিশ বুধবার দুপুরে কর্মরত অবস্থায় স্টেশন মাস্টারকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর বিক্ষুব্ধ রেলকর্মীরা রেলযোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে কালীগঞ্জ থানার এসআই মাসুদ তাকে আবার স্টেশনে পৌঁছে দিলে রেল চলাচল শুরু হয়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কিছু বিষয় জানার জন্য তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে আবার স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
স্টেশন এলাকার চা দোকানি দেলোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে রকেট এক্সপ্রেস ট্রেনটি এসে পৌঁছানোর পর পরই কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বরত মাস্টার শাহাদতকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় রেল কর্মীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ট্রেন চালাতে অস্বীকার করে। ফলে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রায় একঘন্টা পর স্টেশন মাস্টার ফিরে আসলে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটি পুনরায় যাত্রা করে।
স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন শাহাদত জানান, বুধবার দুপুর ১২.৪৭ মিনিটে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রকেট এক্সপ্রেস ট্রেনটি মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় আমি ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এমন সময় কালীগঞ্জ থানার পুলিশ এসে আমাকে বলে থানায় যেতে হবে। তখন আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পুলিশের সাথে থানায় যাই। আধা ঘন্টা পর তারা আমাকে আবার স্টেশনে পৌঁছে দেয়। অবশ্য ষ্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন শাহাদত কে পুলিশ নিয়ে যাবার খবর পেয়ে মোবারকগঞ্জ রেলষ্টশনে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা রকেট ট্রেন টি লাইন কিয়ার না দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে রকেট ট্রেন ও ষ্টেশনের কর্মরতরা বিক্ষোভ করতে থাকে। কেন তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো এমন প্রশ্নে তিনি জানান, দু’দিন আগে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটের সাথে টিকিটি নিয়ে বাদানুবাদ হয়েছিল। ঐ ম্যাজিষ্ট্রেটের গাড়ি চালক ষ্টেশন মাস্টারের কাছে অগ্রিম টিকিট নিতে যায়। কিন্তু সে সময় ট্রেনের কোন সংবাদ না পাবার কারণে কর্তৃপক্ষ টিকিট দিতে পারছিল না। পরে ম্যাজিষ্ট্রেট তার ব্যবহৃত গাড়ি থেকে নেমে এসে টিকিট চান। ষ্টেশন মাস্টার বলেন, গাড়ির খবর হলে টিকিট ছাড়া হবে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায় ষ্টেশন মাস্টার রেগে গিয়ে ম্যাজিষ্ট্রেট এর সাথে নাকি খারাপ ব্যবহার করে। সে সময় তিনি আমার চাকরী খেয়ে ফেলবেন বলে হুমকি দিয়ে যান। সে কারণে হয়তো আমাকে নিয়ে যেতে পারে। পরে ১.৩৫ ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুস আলী জানান, কয়েকদিন আগে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটের সাথে টিকিট নিয়ে বাদানুবাদ হয় এবং তিনি আদালত থেকে একটি সমন পাঠানোর কারণে ষ্টেশন মাস্টারকে থানায় আনা হয়েছিল। পরে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আবার রেলষ্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ওসি আর বলেন, বিষয়টি জানার জন্যই তাকে থানায় আনা হয়েছিল।