কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনের অবস্থা বর্তমানে ভয়াবহ রকমের ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে নির্মিত এ ভবনের ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা, বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। জরুরি সংস্কার না হলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে এই ভবনেই প্রতিদিন শত শত রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, তাড়াইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হলেও এখানে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন ৪৫০ থেকে ৫৫০ জন, আর জরুরি বিভাগে সেবা নেন ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী। শুধু তাড়াইল নয়, আশপাশের করিমগঞ্জ, ইটনা, ময়মনসিংহের নান্দাইল এবং নেত্রকোণার কেন্দুয়া ও মদন থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন।
হাসপাতালের ভবনের এমন বিপজ্জনক অবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও রোগীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জেসমিন সুলতানা বলেন, “ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ইট, বালু ও সিমেন্ট খসে পড়ে যাচ্ছে। অনেক সময় রোগীদের সঙ্গে থাকা লোকজনও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবুও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করছি।”
সম্প্রতি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। ছাদের পলেস্তারা ও বৈদ্যুতিক পাখা ভেঙে পড়ে এক কর্মচারী আহত হন। পুরনো ভবনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় বড় ধরনের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
চিকিৎসাধীন রোগী মোছা. আছমা বেগম বলেন, “এই ভবনে ঢুকলেই ভয় লাগে। ফ্যান চালু থাকলে ছাদের অংশ ভেঙে পড়ে। সবসময় একটা আতঙ্ক কাজ করে—না জানি কখন কী হয়ে যায়।”
তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অতিশ দাস রাজীব বলেন, “হাসপাতালের ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ছে, ভবনের অবস্থা নাজুক। আমাদের স্টাফরা চরম ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর ভবন সংস্কারের আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তাড়াইলের মতো একটি উপজেলায় স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এটিই একমাত্র ভরসার স্থল। তাই দ্রুত ভবন সংস্কার না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।