আবু সায়েম মোহাম্মদ সা’-আদাত উল করীম :
“একজন কলেজের নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক প্রভাবশালী ব্যক্তির এপিএস পরিচয় দানকারী জামতলী বাজারে মার্কেট, শহরে তিনটা জমি ক্রয়, ব্যাংকে লাখ লাখ টাকা এসবের উৎস কোথায় দয়া করে দুদক অনুসন্ধান করবেন কি?” বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জামালপুর জেলা শাখার সদস্য মো. সরোয়ার হোসেন শান্ত’র এই স্ট্যাটাসে অশান্ত হয়ে উঠেছে জামালপুর জেলায় কর্মরত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের একটি অংশ। এই বিষয়টি জামালপুর শহরে টক অব দ্যা সিটিতে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ও সাংবাদিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আবহমান কাল থেকেই জামালপুর জেলার শান্তিপ্রিয় মানুষ যা কখনোই এমনটি কামনা করেন না। দিন দিন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে দূরত্ব বেড়েই চলেছে। এদিকে জামালপুর প্রেসক্লাব কর্তৃক আয়োজিত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মানববন্ধনে জামালপুরের তিনজন সাংবাদিককে হুমকি ও ফেসবুকে আপত্তিকর লেখালেখি করা হয়েছে এর প্রতিবাদের দাবিতে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ২৬ অক্টোবর বেলা ১১টায় শহরের দয়াময়ী মোড়ে। সাংবাদিকদের এই মানবন্ধনে জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জামালপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, সহ-সভাপতি দুলাল হোসাইন, কার্যনির্বাহী সদস্য শওকত জামান, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিন্টু, জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর সেলিম, প্রমুখ।
মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি জামালপুর শহরের বামুনপাড়া এলাকায় একটি নিরীহ পরিবারের জমি জবরদখলে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে অন্যতম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ভূমিদস্যু সরোয়ার হোসেন শান্ত’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলে সংবাদ প্রচারিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাছরাঙা টেলিভিশন ও দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি প্রভাষক মো. মাহফুজুর রহমানসহ তিনজন সাংবাদিককে দেখে নেয়ার হুমকি এবং ফেসবুকে আপত্তিকর লেখালেখি করেন। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।মানববন্ধন থেকে এ ধরনের হুমকির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সাথে আওয়ামী লীগনেতা মো. সরোয়ার হোসেন শান্তকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জোরালো দাবি জানানো হয়। তা নাহলে এর প্রতিবাদে পরবর্তীতে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. সরোয়ার হোসেন শান্ত তার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের এই মানববন্ধন কর্মসূচির প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্যই এটি একটি হীন চক্রান্ত। তারা যেভাবে আমাকে ভূমিদস্যু হিসেবে উল্লেখ করেছেন ,আমি তার সঠিক ব্যাখ্যার দাবি জানাই। এছাড়া গং বলতে কাদের বুঝিয়েছেন এই বিষয়টিও পরিস্কার করা প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান এর দুর্নীতি আড়াল করার জন্যই সে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য লিপ্ত হয়েছেন। তাছাড়া তার দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত।অপরদিকে, জামালপুর শহরে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত এই পরিস্থিতিতে অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করছেন। প্রকৃতপক্ষে, সাধারণ মানুষ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক আবারো গড়ে উঠবে এমনটিই আশা করেন।