আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
নীলফামারীর ডোমারে বোড়াগাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে চাকুরি দেয়ার নামে অর্থ আ’ত্মসাৎ ও প্র’তারণার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে দুইজন ভুক্তভুগী প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম এর বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বোড়াগাড়ী এলাকার মৃত- প্রতুল দাশ গুপ্ত’র ছেলে প্রতীম কুমার দাশ গুপ্ত মিঠু কে ০৯/১২/২০১৩ ইং সালে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগার পদে নিয়োগ দেন। সেই সময় প্রধান শিক্ষক মিঠুর কাছে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। বেতন বাবদ যা খরচ হবে তা পরে বহন করতে হবে মর্মে যোগদানের পূর্বে মিঠু প্রধান শিক্ষককে ৮ লক্ষ টাকা বুঝিয়ে দেয়। প্রধান শিক্ষক কর্তৃক স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র পেয়ে শ্রেণি পাঠদানসহ নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। কিছুদিন পর প্রধান শিক্ষক জানান, সহকারী গ্রস্থাগার পদে বেতনভাতা আনতে সমস্যা হবে মর্মে মিঠুকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রস্তাব দেয়। অপরদিকে, প্রধান শিক্ষক মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক/ক্যাটালগার পদে অন্য একজনকে নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সহকারী শিক্ষক পদের জন্য এবং বেতন ভাতা খোলার জন্য সর্বমোট প্রায় ২১ লক্ষ টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি। এভাবে বিভিন্ন লোকের কাছে নিয়োগ বাণিজ্য করে বিদ্যালয়ের সামনে জমি ক্রয় করে বিলাস বহুল অট্টালিকা নির্মাণ করেছে যাতে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। এমনিভাবে প্রায় ১১ বছর যাবত বিনাশ্রমে শিক্ষকতা করে জীবন কাটিয়ে দিয়ে এবং কোনো প্রকার বেতন ভাতা না পেয়ে প্রতীম কুমার দাশ গুপ্ত মিঠু তার পরিবার -পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
চাকুরির বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে বাকবিতণ্ডা হওয়ায় বিগত ১ বছর যাবত প্রতীম কুমার দাস গুপ্তকে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ এবং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে বাধা প্রদান করেন প্রধান শিক্ষক। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষকের অনুগত লোকজন দিয়ে প্রতীম কুমার দাশ গুপ্ত মিঠুকে চাকুরি হতে ইস্তফা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে এবং বিভিন্ন ধরনের ভ’য়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে জানান। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে তিনি গত ০৮/০৭/২০২৪ ইং তারিখে প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার কারণে প্রধান শিক্ষক মিঠুর উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। ইতিপূর্বে উক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দূ’র্নীতি, স্ব’জনপ্রীতি, জা’লিয়াতি ও অর্থ আ’ত্মসাতের বিষয়ে বিদ্যালয়ের অভিভাবক শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি গত ০১/০৭/২০২৪ইং তারিখে নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সঠিক তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান ভুক্তভুগী পরিবারের লোকজন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২ জন ব্যক্তি অভিযোগ করেছে। একাডেমিক সুপার ভাইজার শফিউর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কিছু কু’চক্রী মহল অর্থ লোভের আশায় আমার কাছে ফন্দি ফিকির করছে। আমার নামে যে সকল অভিযোগ ছড়াচ্ছে সমস্ত কিছু মি’থ্যা ও বা’নোয়াট। আমার নিয়োগের আগে প্রতীম কুমার দাশ গুপ্ত কমিটির মাধ্যমে নিজের নিয়োগের রেজুলেশন নিজে লিখে আমাকে চাপ প্রয়োগ করে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। আ’লীগ ক্ষমতা থাকাকালীন স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে হু’মকি দিয়ে আমার চেক ও ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়। পরবর্তীতে আমি মেনে নিয়েছিলাম। এখন আমাকে চেক- ষ্ট্যাম্প কিছুই ফেরত দেয়না।’
এসময় কর্তৃপক্ষের কাছে এর সমাধান চান তিনি।