
আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
প্রথম প্রেমিকা গত ৫দিন ধরে বাড়ীতে অবস্থান, দ্বিতীয় প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন প্রেমিক নিপন রায়।
ঘটনাটি ঘটেছে, গত মঙ্গলবার নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানা বাবুপাড়া গ্রামে। নিপন রায়(২৫) বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানা বাবুপাড়ার বাবু ভূপেশ রায়ের ছেলে ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র। প্রথম প্রেমিকা আঁখি অধিকারী নীলফামারী সরকারি কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী ও সদর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউানয়নের খলিশাপচা মাস্টার পাড়ার মহেন অধিকারীর মেয়ে। দ্বিতীয় প্রেমিকা মৌমিতা বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের শিয়ালডাঙ্গা এলাকার শিক্ষক মদন মোহন অধিকারীর মেয়ে।
প্রথম প্রেমিকা আখি অধিকারী বলেন, নিপনের সাথে আমার ৬ বছরের প্রেমের সম্পর্ক। নিপনের মামা কনকের মাধ্যমে নীলফামারী কলেজে আমার পরিচয় ঘটে। এরই এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। লেখাপড়ার কারণে এক সময় আমরা দু’জনে ঢাকা গেলে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আমরা দু’জনে ঢাকার লোকনাথ মন্দিরে বিয়ে করি। বিয়ের পর নিপনের এক বান্ধবীর বাসায় আমরা স্বামী স্ত্রীর পরিচয়ে এক সপ্তাহ অবস্থান করি। তারপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রাত্রি যাপন করি। বিয়ের বিষয়টি চাকুরি না হওয়া পর্যন্ত আমাকে গোপন রাখতে বলেছিল নিপন। কিন্তু কিছুদিন ধরে নিপন আমার সাথে আগের মত আর যোগাযোগ রাখছে না। তাই তাকে ফোন দিয়েই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি তার বাড়ীতে চলে আসি। এখানে এসে নিপনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ীর লোকজন আমার সাথে ভালো ব্যবহার করলেও আমার ফোনটি তারা রেখে দেয়।
আঁখি আরো জানায়, নিপনের পরিবার চাচ্ছে আমি এখান থেকে চলে যাই। তারা আমার পরিবারকে ৪লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার লোভ দেখাচ্ছে। তবে আমার পরিবার তাতে রাজি হয়নি।
তিনি কান্না জড়িতকন্ঠে জানান, শুনেছি সে নাকি অন্যত্র আরেক প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে। কথাটা সত্য কিনা জানিনা। তবে সে যদি অন্য মেয়েকেও বিয়ে করে তারপরও আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে হবে। আমি যদি স্ত্রীর মর্যাদা না পাই তাহলে এখানে আত্মহত্যা করবো।
প্রথম প্রেমিকা আঁখির পরিবারের লোকজন জানান, নিপন প্রাইমারী নিয়োগের লিখিত পরিক্ষায় উর্ত্তীন হওয়ায় এখন সে আমাদের মেয়ের সাথে প্রতারণা করছে।
দ্বিতীয় প্রেমিকার বাবা শিক্ষক মদন মোহন অধিকারীর কাছে তার মেয়ের বিয়ের বিষয়টি জানতে চাইলে বলেন, আমরা এবিষয়ে স্টপ। কিন্তু গত কাল শনিবার তার মেয়ের সাথে নিপনের বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, তারা রংপুরে বিয়ে করেছে। কিন্তু বিয়েতে আমি উপস্থিত ছিলাম না।
নিপন রায়ের বাবা বাবু ভূপেষ চন্দ্র রায় বলেন, মেয়েটি গত পাঁচদিন ধরে আমার বাড়ীতে আছে। মেয়েটি বলছে সে নাকি আমার ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমার ছেলে বাড়ীতে আসুক তার মুখে শুনে সিদ্ধান্ত নিবো। তবে, মদন মোহন অধিকারীর মেয়েকে বিয়ে করেছে কিনা তা আমি ও আমার পরিবারের কেউ জানি না।
নিপন’র চাচা বাবু জগদিশ চন্দ্র রায় জানান, পার্শ্ববর্তী মদন মোহনের মেয়ে মৌমিতা নামে এক মেয়েকে নিপন বিয়ে করেছে বলে আমাদেরকে একটি এফিডেভিটের কাগজ দেখিয়েছে। আঁখি অধিকারী নামে আরেকটি মেয়ে বাড়ীতে এসে আছে। তাই নিপনকে বাড়ীতে আসতে বলা হয়েছে। বাড়ীতে অবস্থান নেয়া মেয়েটির কথা যদি সত্য হয়, তাহলে আমরা নিপনের সাথে তাকে বিয়ে দিবো।
বোড়াগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিমুন বিয়ের দাবিতে কলেজ ছাত্রীর অবস্থান করার কথা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের সাথে কথা চলছে।
ডোমার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, এবিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।