মো. আক্তার হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি:
কুমিল্লার হোমনায় নি'খোঁজের তিনদিন পর মো. সজীব (৯) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রের অ'র্ধগলিত লা'শ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ১৬ অক্টোবর সোমবার সকালে মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি ডোবা থেকে লা'শটি উদ্ধার করা হয়। সে উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে এবং আলীপুর ক্বাদেরিয়া হাফেজিয়া সুন্নীয়া মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের ছাত্র।

পারিবারিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার সকালে কুহিনুর নামের এক মহিলা গৃহস্থলীর কাজের জন্য ডোবা থেকে পানি আনতে গিয়ে দুর্গন্ধ পায়। সে দুর্গন্ধ পেয়ে এলাকার লোকজনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন এসে উপুড় হয়ে ভাসমান অবস্থায় মাদ্রাসাছাত্রের অ'র্ধগলিত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশের এসআই ইকবাল মনির সঙ্গীয় ফোর্সসহ লা'শটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। স'ন্দেহভাজন মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইয়াসিন ও এক আবাসিক শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

জানা যায়, মো. সজীব গত ১৩ অক্টোবর শুক্রবার মাদ্রাসা থেকে নি'খোঁজ হয়। নি'খোঁজের হওয়ার পর থেকে তাকে খুঁজে না পেয়ে ওইদিনই মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইয়াসিন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ তিনি উল্লেখ করেন, বিবাদীগণ হিং'সুটে, দু'ষ্কৃতকারী ও খারাপ প্রকৃতির লোক এবং তারা এলাকায় মাদ্রাসা পরিচালনা করে। আমার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার ছাত্রদের লেখাপড়ার মান ভালো হওয়ায় এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সুনামের সহিত পুরস্কারপ্রাপ্ত হওয়ায় বিবাদীগণ আমার মাদ্রাসার প্রতি প্র'তিহিংসা পোষণ করে ষ'ড়যন্ত্রমূলক মাদ্রাসার ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছে। আমি মাদ্রাসায় না থাকার সুযোগে গত ১২ আক্টোবর বৃহস্পতিবার ৩নং বিবাদী রাত আটটার সময় আমার মাদ্রাসায় এসে ছাত্র আজিজুলকে বলে, তোমার হুজুরের একটি টর্চলাইট আমার কাছে আছে, তোমাকে দিয়ে দিব, এ কথা বলে তার সাথে করে সাফলেজি মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। বিবাদীগণ মাদ্রাসায় নিয়ে আজিজুলকে বলে তোমাকে ভালো মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিবো, তুমি আলীপুর মাদ্রাসা থেকে চলে আসো, এ আলীপুর মাদ্রাসা ২/১ দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। তাকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করাতে না পেরে সারারাত আটকে রেখে কাঁচি দিয়ে মাথার পিছন দিক থেকে চুল কেটে দিয়ে কাউকে না বলতে শাসিয়ে ছেড়ে দেয়। সে মাদ্রাসায় এসে স্বাক্ষীগণের উপস্থিতে সকল ঘটনা খুলে বলে। মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইয়াসিন অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, গত ১৩ আক্টোবর শুক্রবার রাত আটটার সময় আমার মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের প্রথম স্থান অধিকারী ছাত্র মো. সজীবকে একইভাবে উঠিয়ে নিয়ে যায় বিবাদীগণ। নি'খোঁজের পর সজীবকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করিতে থাকিলে ১নং বিবাদী স্বাক্ষীগণের উপস্থিতে আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে আপনারা টেনশন করিবেননা, আমি সজীবকে আনিয়ে দিতেছি।

এ ব্যাপারে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, 'স'ন্দেহভাজন মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইয়াসিন ও এক আবাসিক শিক্ষককে জিজ্ঞাসবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসি এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মামলা রজ্জু করার প্রক্রিয়াধীন আছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।'