মোটা অঙ্কের টাকায় রফাদফা, গর্ভজাত সন্তান নষ্ট করার পরিকল্পনা!
মো. কামরুল হক চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার হোমনা পৌরসভার শ্রীমদ্দি ( কুটি পাড়ায়) অবিবাহিত যুবক-যুবতীর অবৈধ মেলামেশায় প্রায় ৮ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েছে এক যুবতী।
জানা গেছে, অভিযুক্ত যুবক একই এলাকার মরম আলীর ছেলে আশিক(২১)। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাতব্বর এবং ভিকটিমের বাবা আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে।
সচেতন মহল বলছেন, 'নির্দিষ্ট সময়ে বাচ্চাটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর কী হবে তার পিতৃপরিচয় ? এ প্রশ্নের জবাব কি দিতে পারবে মাতব্বররা? সুতরাং পিতার পরিচয় নিশ্চিত করতে হলে ছেলে-মেয়েকে বিবাহ দিতে হবে।'
তারা আরও বলেন, টাকার বিনিময়ে যারা এই ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। কারণ স্থানীয় মাতব্বরদের ভূমিকাই এই বাচ্চাটিকে সারাজীবন জারজ সন্তান হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য দায়ী। এ ঘটনায় আগত বাচ্চাটির মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে। তারা এ ন্যক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর বাবা জানান, 'আমরা প্রথম দিকে বিষয়টি বুঝতে পারি নি। আস্তে আস্তে অস্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধি ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিলে, সে(ভিকটিম) তার মায়ের সাথে এই ঘটনা খুলে বলে। মরম আলীর ছেলে আশিকের সাথে তার অবৈধ শারীরিক মেলামেশা হয়েছিল বলে জানায়। পরবর্তীতে আমাদের বাড়ির মুরুব্বী স্বাধীন ও ইয়াছিনসহ অন্যান্য মাতব্বররা মিলে বিষয়টি সমাধান করে দেয়। আমাদেরকে কত টাকা দিবে সেটি আমরা জানি না, মাতব্বররা জানে। আর এ কারণেই আমরা কোনো মামলা করি নি।'
ভিকটিমের ভাই বলেন, 'তারা বলছে( মাতব্বররা) সমাধান করে দিবে। আর না দিলে পরে আমরা অভিযোগ করবো।'
এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানার বার দিনের মাথায় ১৫ এপ্রিল,২০২৫ খ্রি. মঙ্গলবার দুপুরে ভিকটিমের বাড়িতে যায় হোমনা থানা পুলিশ। ভিকটিমের বাবা আব্দুর রহিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হোমনা থানার এস আই ইহসানকে জানান, 'এলাকার লোকজন বিষয়টি আপস-মীমাংসা করে দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ করব না।'
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় মাতব্বর এবং ভিকটিমের বাবা-মা মিলে ভিকটিমকে বাড়ি থেকে সরিয়ে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে এবং ভিকটিমের গর্ভের সন্তান যাতে জীবিত জন্মগ্রহণ করতে না পারে সেই পরিকল্পনা করছে। সচেতন মহল মনে করছেন, গর্ভজাত শিশুটির নিরাপত্তার স্বার্থে ডেলিভারি না হওয়া পর্যন্ত ভিকটিমকে পুলিশের তত্ত্বাবধানে রাখা উচিত।
এ বিষয়ে হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজমুল হুদাকে তার ব্যবহৃত সরকারি নাম্বারে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা অ্যাড. আজিজুর রহমান মোল্লা বলেন, 'আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার কাছে কেউ বিচার চায় নি। আর এধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে যার সন্তান তাকেই গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ ছেলে-মেয়েকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে, যাতে গর্ভের সন্তান পিতার স্বীকৃতি পায়।'
হোমনা-মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম পিপিএম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, 'মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। ভিকটিম বা তার পক্ষে কেউ অভিযোগ না দিলে তো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছেনা। আগে অভিযোগ দিক, তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, উপ-সম্পাদক : মুন্সী নাজমুল হোসেন
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিস : শ্রীমদ্দি মোড়ের বাজার, হোমনা, কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।