
মো. ইব্রাহিম খলিল, হোমনা, কুমিল্লা>>
কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার কৃতী সন্তান ও গরিবের ডাক্তার হিসেবে সুপরিচিত ডা. মো. তারিকুল ইসলাম সুমন চিকিৎসায় এমডি (ডক্টর অব মেডিসিন) ডিগ্রি অর্জন করেছেন । তিনি হোমনা উপজেলার মাথাভাংগা ভৈরব উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক বিদ্যুৎসাহী সদস্য ও ছয়ফুল্লাহকান্দি মাথাভাংগা গ্রামের মৃত মো. রফিকুল ইসলামের কনিষ্ঠ পুত্র।
জানা গেছে, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের উপর অভূতপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেন।
শিক্ষাজীবন: ডা. তারিকুল ইসলাম সুমন, ২০১০ সালে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে মেডিসিনে অনার্স মার্কসহ এমবিবিএস পাশ, এমসিপিএস ( এমসিপিএস – মেডিসিন) বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান এর অধীনে ২০১৯ সালে এমসিপিএস ডিগ্রি অর্জন, এমআরসিপি ( মেডিসিন) ইংল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানের অধীনে ২০১৮ সালে ৩ পর্বের এমআরসিপি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি পর্বের পরীক্ষাই প্রথম প্রচেষ্টায় সফলতা অর্জন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিন পর্বের ৫ বছর মেয়াদি এমডি(ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন) ডিগ্রির চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিন পর্বের পরীক্ষাই প্রথম প্রচেষ্টায় সফলতা অর্জন করেন। তাছাড়া ১৯৯৬ সালে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় সাধারণ বৃত্তি লাভ ,১৯৯৯ সালে মাথাভাংগা ভৈরব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উপজেলায় ট্যালেন্টপুলে ( প্রথম) বৃত্তি লাভ, ২০০২ সালে মাথাভাংগা ভৈরব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জীব বিজ্ঞান এবং রসায়নে এ প্লাসসহ এ গ্রেডে উত্তীর্ণ, ২০০৪ সালে অধ্যাপক আবদুল মজিদ কলেজ থেকে এইচএসসি তে এপ্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
প্রশিক্ষণ : কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাস্পাতালে মেডিসিন, কুমিল্লা ডায়াবেটিক হাসপাতাল এবং বারডেম হাসপাতাল থেকে ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসা দেওয়া, মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকে বক্ষব্যাধি রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞানলাভ, সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাস্পাতালে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা প্রদান সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জন করেন। তাছাড়া করোনা মহামারীর শুরু থেকে করোনাক্রান্ত রোগীর সেবাদানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। চাকুরীজীবনে ৩৩ তম বিসিএস কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৪ সালে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে মেডিসিন এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।
ব্যক্তিগত জীবন : ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক এবং সহধর্মিনী ফাহমিদা শারমিনও একজন ডাক্তার।
ডা. তারিকুল ইসলাম সুমন তার জীবনের সফলতার বিষয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, মেডিকেল সাইন্স এর যেকোনো পরীক্ষার প্রথম চেষ্টায় পাস করা একটি সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমি এমডি পরীক্ষাসহ সকল পরীক্ষার প্রথম প্রচেষ্টায় উত্তীর্ণ হয়েছি, সে জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। একটা মজার ব্যাপার হল, আমার থেকে আমার শিক্ষকমন্ডলীরা সবচেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, আমি অবশ্যই পাস করবো, এই ব্যাপারটি আমাকে খুব আনন্দিত এবং উদ্বেলিত করেছিল। আমার বাবাও আমার ব্যাপারে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, পরীক্ষা দিলে উনি বলতেন ইনশাআল্লাহ পাস হয়ে যাবে। আজ বাবা বেঁচে নেই, আজ এতো বড় একটা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও মনে হচ্ছে যতোটুকু আনন্দ পাবার কিন্তু ততটুকু পাচ্ছিনা ।
তিনি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের করোনা মহামারি এসে গেল এবং বুঝিয়ে দিয়ে গেলো মুমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ বিশেষজ্ঞ বা ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন স্পেশালিস্ট কত প্রয়োজন! আশা করি,করোনা মহামারির মত এরকম যেকোনো মহামারিতে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে আরও সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হবে। পরিশেষে তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।