
ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঠাকুরগাঁওয়ে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা ও জাগোনিউজ২৪.কমের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসানকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগে কোনো ধরনের বিচ্যুতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। সোমবার (১২ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য জানান পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা।
তিনি বলেন, ‘আমলযোগ্য মামলার অভিযোগ গ্রহণ ও গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। সে প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণের নির্দেশ দিয়ে থাকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগে কোনো বিচ্যুতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ জাগোনিউজ২৪.কমের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান এর আগে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে বরাদ্দের বিপরীতে রোগীর খাবার পরিবেশনে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। এই সংবাদ প্রকাশের জেরে তানভীর হাসানসহ তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শনিবার দুপুরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নাদিরুল আজিজ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। নাদিরুল আজিজের দায়ের করা এ মামলায় জাগোনিউজ২৪.কমের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান ছাড়া বাকি যে দু’জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটু ও নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি রহিম শুভ।
যা ছিল সেই প্রতিবেদনে- যে প্রতিবেদনের জেরে সাংবাদিকদের মামলায় আসামি করা হয়েছে, সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল “দিনে বরাদ্দ ৩০০ হলেও করোনা রোগীদের খাবার দেয়া হচ্ছে ৭০ টাকার!” ৫ জুলাই বিকেলে জাগোনিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, একজন করোনা রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ৩০০ টাকা সরকারি বরাদ্দ থাকলেও ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে একজন রোগীকে তিনবেলা যে খাবার দেয়া হচ্ছে, তার বাজারমূল্য ৭০-৮০ টাকার বেশি নয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলমূল দেয়ার কথা থাকলেও তা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে বেশিরভাগ রোগীকেই বাড়ির খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। খাবার সরবরাহে করোনা ইউনিটে দর্শনার্থীর আনাগোনায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ছে।
জাগো নিউজের অনুসন্ধানে দেখা যায়, (প্রতিবেদন প্রকাশের আগে) ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ১৭৪ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের সকালের নাশতায় দেয়া হচ্ছে একটি করে পাঁচ টাকা দামের পাউরুটি, আট টাকা দামের ডিম ও চার-পাঁচ টাকা দামের কলা। দুপুরের খাবারে দেয়া হচ্ছে ডাল, একটি ডিম অথবা এক টুকরো মাছ এবং রাতের খাবারেও ভাতের সঙ্গে এক টুকরো মাছ অথবা একটি ডিম। বর্তমান বাজারদরে তিন বেলার খাবারের দাম হিসাব করলে দাঁড়ায় ৭০-৮০ টাকা। রোগীদের খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ফলমূল দেয়ার কথা থাকলেও সেগুলো দেয়া হচ্ছে না।