
তৌকির আহাম্মেদ হাসু, সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চলছে নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব । অনুমোদিত কোনো বালুমহাল নেই। নদী থেকে বালু উত্তোলনে নেই প্রসাশনের অনুমতিও। তারপরেও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মাসের পর মাস উপজেলার ঝিনাই নদীর একাধিক স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। অপরদিকে, অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনের কবলে পড়ে অনেকেই হচ্ছেন ভূমিহীন। প্রশাসনের নাকের ডগায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ দল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এ বালু বিক্রি করে কেউ কেউ রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে । এ কারণে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় হুমকির মুখে পড়েছে নদী তীরবর্তী ঘর-বাড়ি ও আবাদী জমির মালিকরা। বালু উত্তোলনের প্রত্যেকটি পয়েন্টই নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এদের দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এতে প্রসাশনের কোন মাথা ব্যাথা নেই। এ ব্যাপারে সরকারের ভূমি বিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্তা ব্যক্তিদের নজরদারীর পাশাপাশি যথাযথ ভূমিকা রাখা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভাটারা ইউনিয়নের ফুলবাড়ীয়া গ্রামে সাবেক মেম্বার হিল্লোল দুইটি ড্রেজার দিয়ে অবাধে পারপাড়া এলাকায় ঝিনাই নদী থেকে বালু উত্তোলন করে সরিষাবাড়ী টু জামালপুর পাকা রাস্তার ফুলবাড়ীয়া কালামের দোকানের পাশে জমিতে বালু রেখে তা সারা বছর ৫০০ শত থেকে ১ হাজার টাকা প্রতি গাড়ি বিক্রি করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে। কামরাবাদ ইউনিয়নের বেইলিব্রীজ, কামরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ঝিনাই নদী ও ওই ইউনিয়নের শুয়াকৈর, ডোয়াইল, সাতপোয়া, পোগলদিঘা, আওনা ও পিংনা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ধুম পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়মানুযায়ী নদীর তীর থেকে ২ হাজার ৫০০ ফুট মাঝ থেকে বালু উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না কেউ। নদীর তীরবর্তী এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ড্রেজার দিয়ে যত্রতত্র গর্ত করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সময়ে-অসময়ে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শতশত একর আবাদী জমিসহ বসতভিটা। ওই সব এলাকার বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। প্রতি হাজার (সিএফটি হিসেবে) উত্তোলনকৃত বালু বিক্রি করছে দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকায়। আর নদী তীরবর্তী জমির ভুয়া মালিক সেজে প্রতি হাজার বালু (সরাসরি নদী থেকে) ১ হাজার থেকে ১৫ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা। এতে তারা কোটিপতি হলেও বাস্তুহারা হচ্ছে ভুক্তভোগীরা। অপরদিকে, ওই বালু পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে দিনরাত চলছে চাষের খাঁজকাটা চাকাযুক্ত অসংখ্য ট্রাক্টর। এগুলোর চাকার সঙ্গে উঠে যাচ্ছে পাকা রাস্তার পিচ, পাথর ইটসহ অন্যান্য উপকরণ। কাঁচা মাটির রাস্তার তো কথাই নেই। আর অল্পদিনের মধ্যেই অচল হচ্ছে কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমদ জানান, তারাকান্দি বয়রা হয়ে পলিথিনের অভিযান দিলাম, আজ পারছিনা.তবে এই সপ্তাহে অভিযান চালাবো ইনশাআল্লাহ।
এই ব্যাপারে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কাছে মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।