তৌকির আহাম্মেদ হাসু , সরিষাবাড়ী(জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মোবাইল ছিনতাই ও সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১২ নভেম্বর উপজেলার ফুলবাড়ীয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে ।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে , সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসী উত্তর পাড়া গ্রামের কুব্বাত মন্ডলের ছেলে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মেকানিক্যাল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজু আহমেদ তার বন্ধু ফুলবাড়ীয়া গ্রামের মুস্তাকিন এর সাথে ভাটারা বাজার থেকে ফুলবাড়ীয়া রেলগেইট এলাকায় দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় তার পিতা কুব্বাত মন্ডল ভাটারা বাজারের উদ্দেশে রওনা হয়। পথিমধ্যে তার ছেলে ও বন্ধুর সাথে ফুলবাড়ীয়া রেলওয়ে ক্রসিংয়ের সামনে রাস্তায় দেখা হয়। কুব্বাত মন্ডল তার ছেলেকে বলে, “কোথায় গিয়েছিলে?” তার উত্তরে ছেলে বলে,“ আমি ভাটারা বাজারে গিয়েছিলাম” “ঠিক আছে। ”এ কথা বলে কুব্বাত মন্ডল চলে যায়। এ সময় ভাটারা ইউনিয়নের ফুলবাড়ীয়া গ্রামের দৌলত মন্ডলের ছেলে শামীম ও তার সাথে থাকা কয়েকজন ছেলে যুবক রাজু আহমেদকে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে এবং একসময় বাকবিতন্ডা শুরু হয়। ওই সময় শামীম ও তার বন্ধুরা রাজুকে চর-থাপ্পর, এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিয়ে টেনে হেঁচড়ে হারুন -অর -রশিদ এর বাড়ির একটি কক্ষে নিয়ে যায়। রাজু আহমেদের কাছে থাকা সিম্ফোনি মোবাইল ফোন মডেল নাম্বার ১৭৫ সন্ত্রাসীর কায়দায় জোরপূর্বক নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় রাজুকে হারুন- অর - রশিদের ঘরে একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে ভোররাতে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তার বাড়িতে যেতে চাইলে তারা তাকে মেরে ফেলবে বলে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে চুপ থাকতে বলে এবং গভীর রাতে দৌলত মন্ডল, আমিনুর, কমিশনার লিপ্পন মন্ডল ও সাবেক মেম্বার হিল্লোল শামীম ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীবাহিনী সবাই মিলে হারুন- অর - রশিদের স্কুল পড়ুয়া নাবালিকা মেয়ে বৈশাখীকে বিয়ে করতে চাপ প্রয়োগ করে। রাজু ওই বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তার কাছ থেকে জোরপূর্বক নানা ভয় ভীতি দেখিয়ে সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। রাজুকে আটকে রেখে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনাটি লোক মারফত জানতে পেরে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশকে অবগত করে। খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানার এস, আই, গোলাম সাকলায়েন ও এস, আই, মোঃ আমিনুর রহমান ঘটনাস্থল হারুন-অর-রশিদের বসত ঘর থেকে ১৩ নভেম্বর দুপুরে উদ্ধার করে তার পরিবার-পরিজনের নিকট হস্তান্তর করেন। রাজুকে পুলিশ উদ্ধারের পরপরই দৌলত মন্ডল ও তার ছেলে শামীম মিয়া, আমিনুর ও হারুন-অর-রশিদ রাজু আহমেদের পিতা পরিবারকে মিথ্যে মামলা হয়রানি করবে বলে এলাকায় প্রকাশ্যে প্রচার করছে। এলাকার লোকজনের মাধ্যমে রাজুর পরিবার জানতে পেরে হতাশায় ভুগছে।এ ঘটনায় বাউসী উত্তর পাড়া গ্রামের কুব্বাত আলী মন্ডল এর ছেলে রাজু আহমেদ বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন যার নং৪৯২,তারিখ-১৩/১১/২০১৯ ইং
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে - দৌলত মন্ডল সত্যতা স্বীকার করে বলেন - কমিশনার লিপ্পন মন্ডল, আমিনুর, সাবেক মেম্বার হিল্লোল আমার ছেলে শামীম ও শামীমের বন্ধু মিলে আমার ছোট ভাই হারুন- অর - রশিদের মেয়ে বৈশাখীকে ভাটারা শামীম কাজীর মাধ্যমে সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাজু সাথে কোট কাবিন করে বিয়ে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে বৈশাখীর মাতা রোকিয়া বেগম বলেন, আমার মেয়ে বৈশাখীর সাথে বাহির বাড়িতে কথা বলতেছিল রাজু আহমেদ। এ সময় তার ভাসুর দৌলত মন্ডল ও তার ছেলে শামীম ও বন্ধু তারা তাকে ধরে এনে আমার ঘরে আটকে রাখে। রাজু আহমেদ-এর বাড়িতে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়েও রাজুর পরিবারের লোকজন সাড়া না দেয়ায় সরিষাবাড়ী পৌরসভার বর্তমান কমিশনার নিপ্পন মন্ডল ও ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার হিল্লোল মিয়া ও আমার বড় ভাই আমিনুর এদের সিদ্ধান্তে ভাটারা ইউনিয়নের শামীম কাজীর মাধ্যমে পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুকে আমার মেয়ের সাথে বিবাহ পড়িয়ে দিয়েছি। সে জন্য রাজুর পরিবার আমার বাড়ি থেকে রাজুকে পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার হিল্লোল মিয়া বলেন ,-ঘটনা শুনে সেদিন রাতে হারুন-অর-রশিদের বাড়িতে গিয়েছিলাম মেয়ে বৈশাখী ছেলে রাজু নাবালক তাই সেখান থেকে আমি চলে আসি।
জানতে চাইলে রাজু আহমেদের বড় বোন পারভিন জানান,আমার ছোট ভাই রাজুর কাছ থেকে জোরপূর্বক দৌলত মন্ডল শামীম হারুন-অর-রশিদ ও অজ্ঞাত সন্ত্রাসী দিয়ে লিখিত ও অলিখিত সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও সিম্ফোনি মোবাইল ফোনটিও নিয়ে নিয়েছে ।আমরা এর বিচার চাই । তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানিসহ সন্ত্রাসী দিয়ে মারপিট খুন-জখমের নানা হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার এস, আই, মোঃ গোলাম সাকলায়েন বলেন , রাজু আহমেদ নামে একটি ছেলেকে ফুলবাড়ীয়া গ্রামে হারুন -অর- রশিদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ ব্যারিস্টার মো. ইমরান খাঁন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মো. ওমর ফারুক
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিসঃ গ্রামঃ শ্রীমদ্দি(আলোনিয়াকান্দি), পোঃ- হোমনা, উপজেলাঃহোমনা, জেলাঃ কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।