ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
চাষি হাবিবুর রহমান। ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছে কৃষি খামার। বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের চাষ করেন তিনি। তার এ খামারেই রোদ -বৃষ্টি ঝড়ে ২০ শতক জমিতে অসময়ে তিনি চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। মাঁচার নিচেই ঝুলছে লাল নেটে বাঁধা কয়েক শত এ ফল। রোপণের দু-মাসের মধ্যেই হবে বেচাকেনা শেষ বলে জানান কৃষক। স্বাদও অতুলনীয়। আম্ফান ঝড়ে প্রথম আসা ফুল ও কুঁড়ি নষ্ট হলেও তিনি এ তরমুজ চাষে লাভবান বলে জানান। অসময়ের এ তরমুজ চাষ করেছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার নবগ্রাম গ্রামে। চাষি হাবিবুর রহমান নবগ্রাম গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে।
অসময়ে তরমুজ চাষ নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, অসময়ে মাঁচা করে তরমুজ চাষ তার চাকুরী জীবনে প্রথম। আম্ফান ঝড়ে যদি তার ফুল ও কুঁড়ি নষ্ট না হতো তাহলে বাম্পার ফলন পেতো এ চাষি। তাতে তার লাভের পরিমাণটা বেড়ে যেতো।
অসময়ের তরমুজ চাষি হাবিবুর রহমান বলেন তিনি অন্যের জমি লিজ নিয়ে ১০ বিঘা জমির উপর দুই বছর আগে একটি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলেন। আধুনিক পদ্ধতির চাষাবাদের জন্য তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন। তরমুজ সাধারণত শীতকালে বীজ রোপণ করে বৃষ্টি মৌসুমের আগেই তা শেষ হয়। কিন্ত কৃষি অফিস গত এপ্রিল মাসে আমাকে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষের জন্য উৎসাহিত করেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী ২০ শতক জমি তিনি প্রস্তুত করেন। সেখানে ৫টি বেড তৈরি করে মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে রাখি মাটির সঠিক আদ্রতা ধরে রাখতে। এরপর এপ্রিলের ২২ তারিখে তিনি হাইব্রীড সোহেলী জাতের তরমুজ বীজ রোপণ করেন। রোপণের ৩০/৩৫ দিনের মধ্যে মাঁচায় উঠে যাওয়া গাছে ব্যাপকভাবে ফুল ও কুঁড়ি চলে আসে। কিন্তু আম্ফানে অনেকটাই তা নষ্ট হয়ে যায়। তারপরও মাঁচার ডোগায় ডোগায় ঝুলে আছে ছোট- বড় কয়েকশত তরমুজ। স্বাদও অতুলনীয় বলে তিনি জানান। অসময়ের এ তরমুজের ব্যাপক চাহিদা। তিনি প্রতিটা তরমুজ ৫০/৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বলে জানান। আম্ফানের ক্ষতির পরও তিনি ১৫ শতক জমি থেকে ২০/২৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। তার দেখাদেখি ঐ এলাকার অনেকেই এ ফল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে তিনি জানান। রোপণের পর ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে তরমুজ বেচাকেনা শেষ হয়ে যায় বলে তিনি জানান।
ব্যতিক্রমী এ তরমুজ চাষ নিয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন তুহিন জানান, আগামী বছর এ এলাকায় কৃষকেরা এই তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। মাঠপর্যায়ে তারা সকল প্রকার পরামর্শ প্রদান করবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, শৈলকুপায় হাবিবুর রহমান নামের এক কৃষক মাঁচায় অসময়ে তরমুজ চাষ করেছে। তার চাকুরী জীবনে অসময়ে এ তরমুজ চাষ প্রথম। তরমুজ সাধারণত শীতকালে বীজ রোপণ করে বৃষ্টি মৌসুমের আগেই তা শেষ হয়। কিন্তু কৃষক হাবিব বৃষ্টি মৌসুমের মধ্যে মাঁচা করে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি কয়েকবার অসময়ের তরমুজের এ খামার পরিদর্শন করেছেন। আম্ফানে ক্ষতি না হলে বাম্পার ফলন হতো তার। অসময়ে কোন ফল হলে তার প্রতি ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ থাকে। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে একজন চাষি ২ মাসে সমস্ত খরচ বাদে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করতে পারে বলে তিনি জানান।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ ব্যারিস্টার মো. ইমরান খাঁন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মো. ওমর ফারুক
ইমেইল: [email protected] মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিসঃ গ্রামঃ শ্রীমদ্দি(আলোনিয়াকান্দি), পোঃ- হোমনা, উপজেলাঃহোমনা, জেলাঃ কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।