মিজানুর রহমান , শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ গারো পাহাড় সীমান্তাঞ্চলে আমন ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। সেই জমিতেই আলুবীজ রোপণ করছেন কৃষকরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরোদমে চলছে আলু বীজ রোপণের ধুম। প্রতিদিন কৃষক ও কৃষি শ্রমিকেরা দিনভর আলু বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গ্রামের পর গ্রাম, একরের পর একর আলুবীজ রোপণের ধুম পড়ে গেছে। আলুবীজ রোপণে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে মৌসুমি শ্রমিকদের। প্রতিদিন কয়েক হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক ২৫০ থেকে ৩শ' টাকা মজুরিতেই কাজ করছেন।
‘শেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির ক্রাইম পেট্রোল২৪.কম কে বলেন, 'চলতি মৌসুমে শেরপুরের ৫ উপজেলা ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, নালিতাবাড়ী, নকলা ও শেরপুর সদরে মোট ৫ হাজার ২শ’ ১২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ আলু বীজ রোপণ শেষ হয়েছে। প্রতি উপজেলায় আলু চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ।’
‘নারী শ্রমিক হেলেনা বেগম (৩৫) বলেন, সারাদিন বাড়ির সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকি। কাজ না থাকায় অলস সময় পার করছিলাম। কিন্তু আলু বীজ রোপণ ও আলু তোলার সময় আমাদের চাহিদা বাড়ে। এখন প্রতিদিন কাজ করে ২শ' থেকে ৩ শ' টাকা মজুরি পাচ্ছি। কাজ করে যে টাকা পাই, তা দিয়ে সংসারের বিভিন্ন কাজে খরচ করি।’
‘শ্রমিক আবু মিয়া (৪০) জানান, 'বছরের এই সময়ে আলু বীজ রোপণের কাজ করি, দূরে কাজের জন্য যেতে হয় না। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে হাতে কোনো কাজ থাকে না। তখন বাড়ির পাশেই আলু বীজ রোপণের কাজ করে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় করতে পারি মাসে।’
‘আলু চাষী ইসমাঈল হোসেন (৩৫) বলেন, 'এ বছর ১০ একর জমিতে আলু চাষ করছি। অন্যান্য ফসল চাষের পাশাপাশি আলু চাষ লাভ বেশি। এক একর জমিতে আলু বীজ ক্রয়, রোপণ, সার প্রয়োগ, সেচ ও শ্রমিকসহ খরচ হয় ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে একরে লাভ থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।'
কৃষক সাদেক মিয়া (৩৮) জানান, 'প্রতিবছর তিনি আমন ধান কাটার পরই আলু বীজ রোপণ করেন। এবছরও ব্যতিক্রম করেননি। তিনি ডায়মন্ড, এস্টারিক্স ও সানশাইন এই তিন জাতের আলু বীজ রোপণ করেছেন।আলু গাছের সবচেয়ে খারাপ রোগ লেট বাইট বা আলুর মড়ক রোগ। এই ভাইরাস আলু খেতে একদিনের ব্যবধানে সব গাছ মরে পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। যদি শৈত্য প্রবাহ কম থাকে বা মড়ক রোগের আক্রমন না হয়। তবে আলুতে ভালো লাভ করতে পারবো।’
'বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) শেরপুর জেলার উপ-পরিচালক মো.খলিলুর রহমান বলেন, 'চলতি বছর জেলায় আলুর উন্নত মানের আলু বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।’
‘ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, 'কৃষকেরা এবার লেডি রোসেটা, সানশাইন, এস্টারিক্স, ডায়মন্ড, কারেজ এই চার জাতের আলু বীজ রোপণ করছেন। আশা করছি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হবে।'
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, উপ-সম্পাদক : মুন্সী নাজমুল হোসেন
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিস : শ্রীমদ্দি মোড়ের বাজার, হোমনা, কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।