আবু সায়েম মোহাম্মদ সা'-আদাত উল করীম>>
আইন করে সিগারেট বা তামাকজাত পণ্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হলেও থেমে নেই প্রচারণা। ভিন্ন কৌশলে আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বাহারী এসব প্রচারণার মাধ্যমে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে ধূমপানে আগ্রহী করে তুলছে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ ধারা ৫ এর ‘ক’ উপধারায় বলা আছে, ‘প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনও বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন না, বা করাবেন না।’ আইন অমান্য করলে শাস্তি হিসেবে আইনের ধারা ৫ এর ৪ এ বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তি এ ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে, তিনি অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করলে, তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হবেন।’
সরেজমিনে শেরপুর জেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, সিগারেট কোম্পানিগুলো খুচরা বিক্রেতাদের স্টিকার, লিফলেট, আকর্ষণীয় লাইটার, দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। শেরপুর জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে বাজার ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিভিন্ন দোকানের উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে ও অনুসন্ধান করে জানা যায়, তামাক কোম্পানিগুলো অনেক সময় জোর করে ও অনেক সময় না জানিয়ে তাদের দোকানে বিজ্ঞাপন ও স্টিকার লাগিয়ে যায়।
এই বিষয়ে মোঃ হাবিল আলী হাবিল স্টোর,ব্রহ্মপুত্র বীজ ,চরপক্ষীমারী,মো.হাবিবুর রহমান,আশরাফুল স্টোর চরপক্ষীমারী, শেরপুর ব্রীজ মোঃ রুবেল মিয়া,নন্দীর বাজার, ৯নং চরমোচারিয়া ইউপি, শেরপুর,মোঃ আলমগীর আলী স্টোর,নন্দীর বাজার, শেরপুর, আলম,কুসুম হাটি বাজার,৮নং লসমনপুর ইউপি শেরপুর,মোঃ ফারুক মিয়া কুসুম হাটি বাজার শেরপুর,ফজল হক ,কুসুম হাটি বাজার শেরপুর,আব্দুল বারেক কুসুম হাটি বাজার, শেরপুর মিজান ,কুসুম হাটি বাজার,শেরপুর ,সজীব মিয়া কুসুম হাটি বাজার,শেরপুর। উক্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে ও সরেজমিনে অনুসন্ধান করে তামাক কোম্পানিগুলোর এই বিষয়ে জানা যায়।
তামাক বিরোধী জোটের বিভিন্ন সংগঠনের জরিপে মাধ্যমে জানা যায়, দেশের ২৪ শতাংশ মানুষ গণপরিবহনে ধূমপান করে। এর মধ্যে গণপরিবহনের চালক-হেলপারের সংখ্যা বেশি। এছাড়া আদালত এলাকায় ৪ শতাংশ,বিপণিবিতানগুলোতে ১২ শতাংশ, শিশু পার্কগুলোতে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ, সিনেমা হলে ৮ শতাংশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮ শতাংশ, হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে ৪ শতাংশ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ ধূমপান করে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ গণপরিবহনে ধূমপান বিরোধী সতর্কীকরণ সংকেত ব্যবহার করা হচ্ছে না। শিশু পার্কগুলোতে ৩ শতাংশ, সিনেমা হলে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে ধূমপান বিরোধী সতর্কীকরণ সংকেত ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্র ২১ দশমিক ৬ শতাংশ।
তামাক বিরোধী জোটের অন্যতম সংগঠক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মো. ইবনুল সাঈদ রানা বলেন ,ধূমপান যারা করে তাদের চেয়ে ধোঁয়ায় অন্যদের ক্ষতি করে বেশি। এই আইন ভাঙার কারণে যে কি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে তা প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। কোনো জায়গায় আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না। ছোট ছোট বালুকণা মিলেই কিন্তু বিশাল মরুভূমির সৃষ্টি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি মিলেই সৃষ্টি মহাসাগর। আইন না মানার বিষয়টি হতে পারে ছোট। কিন্তু আমরা বলবো আসলে ছোট বিষয় নয়। কারণ ছোট বিষয় হলে আইন প্রণয়ন হতো না। ছোট হোক, বড় হোক জনস্বার্থে বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একান্ত জরুরি।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো. ওমর ফারুক, উপ-সম্পাদক : মুন্সী নাজমুল হোসেন
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিস : শ্রীমদ্দি মোড়ের বাজার, হোমনা, কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।