দিলীপ কুমার দাস, জেলাপ্রতিনিধি, ময়মনসিংহঃ
দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় দুটি ভাঙা সেতুই এখন গলার কাঁটা স্থানীয়দের। দুই ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুঁ'কি নিয়ে চলাচল করছেন তারা। ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের একটি কাঠের সেতু জরাজীর্ণ হয়ে এবং একটি ইস্পাতের (স্টিল) সেতু মরিচা ধরে ভেঙে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দু'র্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আ'শঙ্কা স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাহাতি ঝোড়া (পাহাড়ি পানি প্রবাহের নালা) নলকুড়া ইউনিয়নের ডাকাবর এলাকা হয়ে উপজেলার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সরকারি বাসভবনের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে ধানশাইল ইউনিয়নের চাপাঝোড়া এলাকায় প্রবেশ করেছে। এ ঝোড়ার ওপর দিয়ে স্থানীয় মোল্লাপাড়ার বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার্থে প্রায় পাঁচ বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে চার বছর আগে ঝিনাইগাতী-রাংটিয়া সড়ক থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও শহিদ মিনার হয়ে এ ঝোড়ার ওপর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমেই একটি ইস্পাতের সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের কাজ করার মাত্র দুই বছরেই সেতুটির ইস্পাতে মরিচা ধরে এক পাশ ভে'ঙে পড়ে যায়। এতে দু'র্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই পথে চলাচলকারীরা।
সরেজমিনে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের সেতুটি নড়বড়ে ও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নির্মাণের দীর্ঘদিন হওয়ায় সেতুর কাঠের কিছু কিছু অংশ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানীয়রা বাঁশের খুঁটি দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে সেতুটি সচল রেখে জীবনের ঝুঁ'কি নিয়ে চলাচল করছেন। আর ইস্পাতের সেতুর পশ্চিম প্রান্ত ভে'ঙে ঝোড়ার মধ্যে পড়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. জহুরুল হক বলেন, 'দীর্ঘদিন থেকে এই সেতু ভে'ঙে পড়ে আছে। কিন্তু কেউ খোঁজ নেয় না। এখন ঝুঁ'কি নিয়েই ভয়ে ভয়ে সেতু পার হতে হয়। সবচেয়ে সমস্যা হয় শিক্ষার্থীদের। জরাজীর্ণ সেতু পার হতে তারা ভয় পায়। তাই এখানে দ্রুত একটি মজবুত সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।'
আরেক বাসিন্দা মো. আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, 'ইস্পাতের সেতুটি ভে'ঙে যাওয়ার কারণে আমাদের যাতায়াতে খুব সমস্যা হচ্ছে। এখন অনেক রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। '
কলেজ শিক্ষার্থী মোছা. আনোয়ারা খাতুন বলেন, 'এই ভাঙা সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে সমস্যা হয় আমাদের। সেতুটি কখন যে ভে'ঙে পড়ে যায় তার কোনো ঠিক নাই। উপর দিয়ে হাঁটলে কাঠের সেতুটি নড়বড় করে। এটা দিয়ে যাতায়াত করতে খুব ভয় করে আমাদের। এইখানে একটি পাকা সেতু করলে ভালো হতো।'
ঝিনাইগাতী সদর ইউপির স্থানীয় সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, 'সেতু দুটি ভা'ঙা থাকায় অনেক দিন ধরে ওই এলাকার অপর প্রান্তে বসবাসকারী বাসিন্দারা চলাচলে দু'র্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাই এখানে সেতু দুটি দ্রুত সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন। আমি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।'
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক জানান, 'ওই সড়কটির কোনো আইডি নম্বর না থাকায় সেখানে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো যাচ্ছে না। তবে সমস্যাটির সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ বলেন, 'বিষয়টির খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, উপ-সম্পাদক : মুন্সী নাজমুল হোসেন
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিস : শ্রীমদ্দি মোড়ের বাজার, হোমনা, কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।