
মো. সাইফুল্লাহ খাঁন,জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : রংপুর মহানগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসা বন্ধের দাবিতে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী। সেই সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা। এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেওডোবা পাঠানপাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আনাম মিয়া (৩২ ), মৃত মাসুম মিয়া ছেলে মাজেদুল ইসলাম (৪২ ), মো. নুরুল ইসলামের ছেলে হাফেজুল ইসলাম ভেলসা (৩৫), মো. আব্দুল জলিলের ছেলে শিহাব (২১), পারভেজ মিয়া (৩২), লেবু মিয়া (২৬) পাপেল মিয়া(২০) উভয়ের পিতা মমতাজ, নওশাদ হোসেনের ছেলে শামীম মিয়া ও দেওডোবা পশ্চিম ডাঙ্গীরপাড়া এলাকার আজাহার মুন্সীর ছেলে আতা মিয়া (১৯) দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে আসছেন। লিখিত অভিযোগে এলাকাবাসী আরও উল্লেখ করেন, সন্ধার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এলাকার বাঁশঝাড়ে ইয়াবাসহ ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে আসছেন তারা। উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীদের একাধিকবার নিষেধ করা হলেও তারা মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই মাদক ব্যবসা বন্ধসহ দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে দেওডোবা পাঠানপাড়া এলাকার আতাউর রহমান বাবলা জানান, এলাকাবাসীর পক্ষে গত ৩ জুন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, মেট্রোপুলিশ কমিশনার, র্যাব-১৩ ও আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ইনর্চাজ বরাবার লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ করে তিনিও বলেন, উল্লেখিত ব্যক্তিরা মাদকের ব্যবসা আগে কিছুটা গোপনে করলেও মাস তিনেক থেকে প্রকাশ্যেই চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মাদকসেবীরা মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস নিয়ে এলাকায় আসে। বিকেল থেকে এদের আনাগোনা শুরু হয়। চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। এদের অত্যাচারে নারী, শিশুসহ সাধারণ মানুষের পথচলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিক্ষার্থীরা প্রায়ই এদের দ্বারা উত্ত্যক্ত হয়।
অভিযুক্ত আতা মিয়া জানান, আমি কোন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নই। এটা পুলিশ ও প্রশাসনের সর্বস্তরের মানুষ জানেন। আমি হনুমানতলা বাজারের একটি দোকানে কাপড়ের ব্যবসা করছি। লকডাউনের কারণে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছি।
অপর অভিযুক্ত আনাম মিয়া জানান, আমি মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। জমি- জমার জের ধরে প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম মিঠু বলেন, জীবিকা নির্বাহের জন্য সমাজে অনেক বৈধ ও হালাল ব্যবসা রয়েছে। এখানে যেভাবে মাদকের বিস্তার ঘটছে, তা এই ওয়ার্ডের জন্য লজ্জাজনক। তিনি আরও বলেন, উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীদের বারবার নিষেধ করার পরেও তারা মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে সমাজের উঠতি বয়সের যুবকরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। আমি চাই যেকোনো মূল্যে এ এলাকা মাদকমুক্ত হোক। মাদকের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
রংপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদ হোসেন জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এতে মাদকসহ লেবু নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, মাদকের বিষয়ে কোন ছাড় নাই। করোনার কারণে অনেক স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে না।