
মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর: রংপুর সিটি কর্পোরেশনের হাজির হাট থানাধীন ১১ নং ওয়ার্ডের ‘বালার বাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়’ এর মাধ্যমিক শাখা দীর্ঘ ২০ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি। স্থানীয় ডোনার ও সুশীল সমাজের লোকজনের সহযোগিতায় ১.০২ একর জমিতে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠাণটি (কোড :৫৩০৯) স্থাপিত হয়। ১৯৯৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক রাজশাহী বোর্ড কর্তৃক প্রথম স্বীকৃতি পেলে ১৯৯৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগসহ নবম শ্রেণি ও ২০০০ সালে দশম শ্রেণি চালু করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ২০০১ সাল হতে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সন্তোষজনক ফলাফল অর্জন করছে। এটি সিটি কর্পোরেশনের ১০,১১ ও ১২ এই তিন ওয়ার্ডের মধ্যে একমাত্র বালিকা বিদ্যালয় ও বিস্তৃত এলাকাজুড়ে মনোরম পরিবেশে বালিকাদের শিক্ষাঙ্গণ। যা বেতনহীন ধারাবাহিক শিক্ষা প্রদানে এ অঞ্চলের নারী শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি, শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা,পাশের হারসহ এমপিওভুক্তি অন্যান্য সকল শর্তাবলী পূরণে বালার বাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রায় দেড়যুগের অধিক সময় ধরে শতভাগ সফল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমিক শাখা প্রায় ২০ বছরেও এমপিও হয়নি। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে মোট ১৩ জন শিক্ষক নিয়োজিত রয়েছেন। তন্মধ্যে মাধ্যমিক শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত ৪ জন শিক্ষক অদ্যাবধি বেতন না পাওয়া সত্ত্বেও নিরলস প্রচেষ্টায় কৃতিত্বের সাথে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগীদের অনুরোধে বিনাবেতনে নামমাত্র সম্মানী নিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরিবার পরিচালনা করলেও এমপিওভুক্তির প্রহর গুনছেন তারা। সর্বশেষ ২৩ অক্টোবর২০১৯ সরকার ঘোষিত এমপিওভুক্তির তালিকায় প্রতিষ্ঠাণের নাম না থাকায় চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দ্রুপদ রায় ক্রাইম পেট্রোল ২৪ ডট কমকে জানান, রংপুর-৩ এর মাননীয় সংসদ সদস্য পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার জীবদ্দশায় আমাদের ডিউ লেটার দিয়ে গেছেন, বর্তমানে তার পুত্র সাদ এরশাদ আমাদের আশ্বস্ত করলেও মিলছে না কোনো ফল।
প্রধান শিক্ষক বিপ্লব চন্দ্র রায় বলেন, বালার বাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শাখা থেকে শিক্ষা গ্রহণকারী মেধাবী ছাত্রী দেশের স্বনামধন্য বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়াশোনা করে অনেকেই সরকারি কর্মকর্তা হয়ে গেছেন অথচ আমাদের মাধ্যমিক শাখা আজও এমপিওভুক্ত হলো না, শিক্ষকেরা পেল না ২০ বছরেও কোন বেতন, তবুও আমরা হতাশ হতে নারাজ। তিনি অত্যন্ত কষ্ট প্রকাশ করে বলেন, এমপিওভুক্তির দাবি প্রতিষ্ঠান, ছাত্রী ও শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার তাই আমরা এমপিওভুক্তি চাই। সুতরাং ‘বালার বাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়’কে যথাশীঘ্র এমপিওভুক্ত করা হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি যেমন বাড়বে, তেমনি নারী শিক্ষায় অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করবে বলে ধারণা ব্যক্ত করে এলাকাবাসী। শিক্ষক- কর্মচারী ও এলাকাবাসী দ্রুত এমপিও ভুক্তির দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি ও রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচনে বিজয়ী রাহাগির আল মাহি সাদ এরশাদসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।