মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : এক যুগ আগেও গ্রামীণ জনজীবনে হাতে হাতে হাতপাখা দেখা যেতো। গরমকালে এর বেশ কদরও ছিলো। অনেকে বাঁশের ফ্রেম করে নিপুণ হাতে সুতো বুনে, আর কেউবা তালপাতা, গোল পাতা,কাপড় দিয়ে তৈরি করতো শরীর শীতল করার এই হাতপাখা। এবার বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে নতুন করে হাতপাখার কদর বেড়েছে রংপুরে। সুযোগটি লুফেই নিয়েছেন বেশকিছু হাতপাখা বিক্রেতা। গত কয়েকদিনে রংপুর অঞ্চলে একদিকে প্রচন্ড তাবদাহ অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং আর লো ভোল্টেজের কারণে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। বিভাগীয় নগরী রংপুরে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস। সেখানে সার্বক্ষণিক বিদ্যুত সরবরাহ করতে পারছে না পিডিবি। দেখা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে লো ভোল্টেজের কারণে সিলিং ফ্যান তেমনভাবে ঘুরছে না। ফলে প্রচণ্ড গরমে নগরবাসীর নাভিশ্বাস উঠেছে । বাসাবাড়িতে গরমের তাপ থেকে নিজেকে খানিকটা শীতল করতে অনেকে নগরীর ফুটপাতে হাতপাখা কিনতে ছুটে আসছেন। বাসাবাড়ির পাশাপশি তারাবির নামাজ আদায়কালে গরম থেকে বাঁচতে অনেক মসজিদেও ডজন ডজনে হাতপাখা কিনতে দেখা গেছে।
শনিবার( ১ মে) দুপুরে নগরীর কাচারি বাজার, কোর্ট চত্বর এবং ধাপ মেডিক্যাল এলাকায় ভ্রাম্যমাণ হাতপাখা বিক্রির দোকানগুলো এখন ক্রেতা সমাগমে ভরপুর। এসব দোকানে আগের তুলনায় গত কয়েকদিন থেকে বেচাকেনা প্রায় দ্বিগুণ। পাখার ধরনভেদে একটি হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়।
কাচারি বাজার এলাকায় প্রধান ডাকঘরের সামনে পাখা বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, গত চার-পাঁচ দিন থেকে হাত পাখার চাহিদা বেড়ে গেছে। এখন দিনে ২০০-২৫০ পিস হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে। ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকার দামের হাতপাখা বিক্রি করছেন। এতে দিনে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।
হাতপাখা ক্রয় করতে আসা যুবক রাফি জানান, গত এক সপ্তাহে তাদের এলাকায় প্রায় ২০-২৫ জনের ফ্রিজ, টেলিভিশন, ফ্যান টিউব লাইট নষ্ট হয়ে গেছে। তার বাসাতেও একটি ফ্যান নষ্ট হয়েছে। করোনার কারণে অযথা বাহিরে বের হতে নিষেধ করেছেন সরকার, কিন্তু বিদ্যুত ঠিকমতো না থাকার কারণে গরমে ঘরেও থাকতে পারছেন না তিনি। বিকল্প হিসেবে এই হাতপাখা কিনতে এসেছেন। বিদ্যুত না থাকার সুযোগে পাখা প্রতি ১০-১৫ টাকা করে বাড়তি চাইছে বিক্রেতারা। উপায় নেই, তাই ৪টি পাখা কিনেছেন।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচন্ড গরম আর বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজে অতিষ্ঠ হয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শ্রমিক অধিকার আন্দোলন নামের একটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুত নেওয়ার যে ট্রান্সফরমার, সেটি অকেজো হয়ে পড়েছে। তাই ট্রান্সফরমার বাড়ানোসহ এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র না হওয়া পর্যন্ত লো ভোল্টেজ থেকে নিস্কৃতি পাওয়া যাবেনা বলে জানান রংপুর পিডিবি অফিসের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন।
অপরদিকে চলতি সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলে ১০ বছরের রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানান রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ ব্যারিস্টার মো. ইমরান খাঁন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মো. ওমর ফারুক
ইমেইল: [email protected] মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিসঃ গ্রামঃ শ্রীমদ্দি(আলোনিয়াকান্দি), পোঃ- হোমনা, উপজেলাঃহোমনা, জেলাঃ কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।