মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর :
রংপুর মহানগরীর ঘাঘট নদী থেকে অ'বৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ‘দ্বীপ’ এলাকা বলে পরিচিত পানবাড়ি এলাকার ব্রিজটি। একইসঙ্গে ওই সড়কে প্রতিনিয়ত অসংখ্য বালু বোঝাই ট্রাক চলাচল করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সড়ক। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা।
গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালু তুলে বিক্রি করতে নিষেধ করায় মামলাও দিয়েছেন আলম নামে এক ব্যক্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রংপুর মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পানবাড়ি গ্রামে ঘাঘট নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে আসছেন একদল ব্যবসায়ী। এতে করে ওই ব্রিজটি হুমকিতে পড়েছে। এমনকি নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করায় নদীর কিনারায় থাকা বাড়িগুলো হুমকিতে পড়েছে। সড়কে চলাচল করতে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এখানে যারা মাথা(প্রধান) আছে তারা এসে ব্যবসা করছে। আমাদের বাসার সাথে নদী, ওরা নদী থেকে বালু তুলছে। ওদের বললে ওরা বলে, আমরা নিজস্ব জমি থেকে বালু তুলছি তাতে তোমাদের কী? তোমরা বাঁধা দিতে পারবা না। ওদের টাকা পয়সা আছে, ওদের জোর আছে, আমরা গরীব মানুষ, ওদের সঙ্গে প্রতিবাদ করতে পারবো না। আমরা অনেক চিল্লাচিল্লি করি, বাঁধা দেই কিছু হয় না। পরে আমরা বলছি, ভাই আপনারা ব্যবসা করেন আমাদের যেন ক্ষতি না হয়।বাড়ি ঘর ভাঙ্গলে যা ব্যবস্থা নেওয়া লাগে আমরা নেব।
আরেক বাসিন্দা জানান, ব্রিজের পাশের পয়েন্টে ম্যাজিস্ট্রেট পাঁচ সাতবার আচ্ছিল, পুলিশের তো হিসেব নাই। রাস্তার জন্য অভিযোগ যায়, পুলিশ আসি বলে সরকারি রাস্তা দিয়ে বালু যায় তাতে আপনাদের কী? এই মাটি বালু তো সরকারি কাজে যায়, সরকারি রাস্তায় যায়, আপনারা বাঁধা দিবেন কেন? ধুলা দিয়ে বাড়ি ঘর অন্ধকার হয়া যায়। তিনি বলেন, আমার স্বামী রিক্সা চালায়, রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় রিক্সা নিয়ে বাড়িত আসতে পারে না।
আরাজি ধর্মদাস এলাকার এক অটোচালক বলেন, বালু উবাইতে উবাইতে রাস্তা ভাঙ্গি ফেলাইছে। চুরমাচার হইছে। যাওয়াই তো যায় না। কত এক্সিডেন্ট হওছে। এ্যালাই চারজন লোক অসুস্থ্ হয়া হাত ভাঙ্গি পড়ি আছে।
পানবাড়ি পূর্বপাড়ার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, যখন পুল পার হয় তখন গাড়ি গড্ডি গড্ডি পড়ি যায় দোলা বাড়িত। কারো হাত ভাঙ্গে কারো পাও ভাঙ্গে। দারগা ওসিক বলতেছি, কাউন্সিলরক বলতেছি তারা গুরুত্বই দেয় না। তখন আমি বলছি, টাকা ভাগ খান নাকি?
আনছারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, বালু তোলা বন্ধে আমরা মানববন্ধন করেছি, বিক্ষোভ করেছি, বাঁধা দিয়েছি। এজন্য আমাকে এক নম্বর আসামী করে একটি চাঁ'দাবাজি মামলা দেয়া হয়েছিল। আমরা সবাই জামিন নিয়েছি।
মামলার বাদী আলম জানান, আমি যখন বালু তুলছিলাম সেগুলো সরকারি জায়গায় দেয়া হচ্ছিল। বালু তোলার কারণে চাঁ'দাবাজি করার মামলা করা হয়েছে।
৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছামছুল হক বলেন, শুনেছি বালু উত্তোলন করা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে নজিরের হাট এলাকার গুচ্ছগ্রাম হুমকির মুখে, রাস্তাঘাট সবকিছুই বালুমহলের দখলে। এছাড়া মহানগরীর ১৩ নং ওয়ার্ডের হোলার পুকুর এলাকায় সাবেরুলের বালুর পয়েন্টে অ'বৈধ বালু উত্তোলনে প্রতিনিয়ত আবাদী জমি কমছে, অনেকেই জমি হারিয়েছে, ভয়ে কথা বলার সাহস পায় না বলে অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
এ নিয়ে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, মেট্রোপলিটন এরিয়ায় সরকারিভাবে কোন বালু মহাল নেই। যদি অ'বৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করে থাকে তাহলে সেটার ব্যবস্থা নিবে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তারা আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করব।
এ নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ( মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ বিষয়ে যদি আমাদের কাছে লিখিত কেউ অভিযোগ নিয়ে আসে তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ ব্যারিস্টার মো. ইমরান খাঁন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মো. ওমর ফারুক
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিসঃ গ্রামঃ শ্রীমদ্দি(আলোনিয়াকান্দি), পোঃ- হোমনা, উপজেলাঃহোমনা, জেলাঃ কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।