
মোঃ পারভেজ আলম, জেলা প্রতিনিধি, ঢাকা:
সবাই করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘কোন ধরনের কার্যক্রম না থাকলে কেউ যেন স্থানান্তর না হয়, কাজ না থাকলে ঢাকামুখী হওয়া যাবে না, করোনাকে ভয় নয়; সচেতনতার মাধ্যমেই জয় করতে হবে।’
আজ (৩১ মে) ঢাকা সদরঘাটে অভ্যন্তরীণ নৌযান/লঞ্চ চলাচল ও যাত্রী সুরক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি পর্যবেক্ষনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা ঝুঁকিতে ঢাকা সদরঘাটে ‘জীবানুনাশক টানেল’ বসানো হয়েছে, শুধু ঢাকা সদরঘাট নয়, অন্যান্য বন্দরেও এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাত্রী চলাচলে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। নির্দেশনা মানতে অবশ্যই সচেতনতা বাড়াতে হবে। লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদেরকে এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে।
পরে তিনি সদরঘাটে জীবাণুনাশক টানেল উদ্বোধন করেন এবং লঞ্চে যাত্রীদের সাথে কথা বলেন। লঞ্চের ডেকের যাত্রীদের জন্য মার্কিং করা হয়েছে। তিনি সকল যাত্রীদেরকে মার্কিং অনুযায়ী বসার অনুরোধ করেন।
লঞ্চেও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, টিকেট করে লঞ্চে উঠার বিষয়টি আলোচনা করব। টিকেট করে লঞ্চে উঠার বিষয়টি বাস্তবায়নের আমাদের এটাই হচ্ছে উপযুক্ত সময়। এটাকে বাস্তবায়ন করার যাথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তিনি বলেন, মিডিয়াকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পর্যন্ত করোনা ঝুঁকির মধ্যে আছে। বাংলাদেশে ৬০ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। আসলে কোয়ারেন্টিন, লকডাউন, আইসোলেশন শব্দগুলির সাথে আমরা ব্যক্তিগতভাবে আমি পরিচিত ছিলাম না।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সাধারণ ছুটি ৬০ দিন অতিক্রম করেছি। ৬০ দিনে আল্লাহর রহমতে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলার কোথাও কোন অবনতি ঘটেনি। এটা একটা বিরাট সাফল্য। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ হয়েছে, মৌসুমী ঘূর্ণিঝড় হয়েছে এবং বিভিন্ন রকম কার্যক্রম থাকার পরও ৯৫ ভাগ মানুষ নির্দেশনা মেনে চলেছে। কিছু কিছু মানুষ মেনে চলেনি, তা ৫-৭ ভাগ হবে। কোথাও বিশৃঙ্খলা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশে সাময়িক ছুটি বাতিল করে সরকার ১৫ তারিখ পর্যন্ত একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। গণপরিবহণ সীমিত আকারে খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে এবং সে সিদ্ধান্তের আলোকে নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিআইডব্লিউটিএ মার্চের প্রথম সপ্তাহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাত্রী চলাচলে লিফলেট বিতরণ ও প্রচারণা চালিয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও টেম্প্রাচার মাপার যন্ত্রের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। মালিক-শ্রমিকদের সাথে আলোচনা হয়েছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাত্রী চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলা। লকডাউনের কারণে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বিআইডব্লিউটিএ দু’একদিন আগে লঞ্চ মালিক-শ্রমিকদের সাথে আরেকটি সভা করেছে। সভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাত্রি চলাচলে শতভাগ বাস্তবায়নের জন্য মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছি।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে অভ্যন্তরীণ নৌযান/লঞ্চ চলাচলের বিষয়টি নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরামর্শক কমিটি ও জাতীয় কমিটি রয়েছে। তাদের পরামর্শ ও সুপারিশগুলো আমরা বাস্তবায়ন করছি।
ঢাকা সদরঘাটে ছয়টি ‘জীবানুনাশক টানেল’ বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ১৪টি জীবনুনাশক টানেল বসানো হবে। আজ দুপুর পর্যন্ত স্বাস্থ্য ও নৌবিধি মেনে ঢাকা সদরঘাট থেকে চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটে ১৩টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চগুলো ছেড়ে যাবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান খাজা মিয়া এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।