ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক>> ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল,২০২১খ্রি.) রাতে নগরকান্দার শর্শা উত্তর পাড়ার পুকুর পাড় থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবারের দাবি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানায় শর্শা গ্রামের লিটন মিয়া পেশায় একজন গাড়ি চালক। সে গত ২০০২ সালে ঢাকার তুরাগ থানার ভাটুলিয়া গ্রামের আব্দুল কাদের এর মেয়ে কুহিনূর আক্তারকে পারিবারিভাবে আলোচনার মাধ্যমে বিয়ে করে। বিয়ের ৫ বছরের মধ্যে কুহিনূর আক্তার ২ সন্তানের জননী হন। তবে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে স্বামী লিটন মিয়া গোপনে বিবাহ করেন। প্রায় দুই বছর পরে দ্বিতীয় বিবাহের কথা জানাজানি হয়। পরে লিটন মিয়া শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারের লোকজনকে একত্রিত করে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায় । এরপর থেকে স্বামী লিটন মিয়া প্রথম স্ত্রী কুহিনূরের উপর অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। এমনিভাবে চলতে থাকে কুহিনূর আক্তারের অবহেলিত জীবন যাপন। কিছুদিন যেতে না যেতে আবার শুরু হয় কুহিনূরের উপর মানসিক অত্যাচার। পাশাপাশি কুহিনূরকে তার বাবার বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে লিটন। কুহিনূর আক্তার শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বাবা ও ভাইয়ের হাত- পা ধরে প্রথমে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা স্বামী লিটন মিয়ার হাতে এনে দেন। এরপর তিন চার মাস যেতে না যেতেই আবারও লিটন মিয়া তার স্ত্রী কুহিনূর আক্তারকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেয়। এভাবে কুহিনূর আক্তার তার সুখের সংসারের জন্য আবারও বাবা ভাইয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার, পচাত্তর হাজার, ষাট হাজার, পঞ্চাশ হাজার, সত্তর হাজার টাকা করে স্বামী লিটন মিয়ার হাতে এনে দেন। এভাবে ৭/ ৮ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর লিটন মিয়া সাভারে মারুফা নামের এক গার্মেন্টসের মেয়েকে তৃতীয় বিয়ে করেন। বিয়ে করার প্রায় তিন বছর পরে বিষয়টি দুই পরিবারের মাঝে জানাজানি হয়। এদিকে তৃতীয় স্ত্রী মারুফাও এক পুত্র সন্তানের জননী। প্রথম স্ত্রী কুহিনূর আক্তার তার স্বামীকে একাধিক বিয়ের ব্যাপারে বাধা দিলে কুহিনূর আক্তারের ছেলে- মেয়ের সামনে স্বামী লিটন মিয়া শারীরিক নির্যাতন করতো ।এভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলতে থাকে । গত ৬ এপ্রিল ২০২১ তারিখে দিনের বেলায় কুহিনূর আক্তারের সাথে তার স্বামী লিটন মিয়ার দীর্ঘ সময় ফোনালাপ হয় যা তার বড় ছেলে কৌশিক আহমেদ শুনতে পায়। ওইদিন গভীর রাতে কুহিনূর আক্তারের কাছে একটি ফোন কল আসে। সেই ফোন পেয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার পর রাত পেরিয়ে গেলেও আর ঘরে ফেরেনি কুহিনূর। ৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সকাল আট ঘটিকায় লিটন মিয়ার বাড়ির পাশের ডোবায় কুহিনূর আক্তারের মৃতদেহ পানিতে ভাসতে দেখে বাড়ির লোকজন। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে কুহিনূর আক্তারের বড় ছেলে কৌশিক আহমেদ বলেন, আমার মা আত্মহত্যা করেন নি, আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম রেজা বিপ্লব বলেন, এটি হত্যা না দুর্ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট না আসা পযর্ন্ত কিছু বলতে পারছি না।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ ব্যারিস্টার মো. ইমরান খাঁন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মো. ওমর ফারুক
ইমেইল: [email protected] মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিসঃ গ্রামঃ শ্রীমদ্দি(আলোনিয়াকান্দি), পোঃ- হোমনা, উপজেলাঃহোমনা, জেলাঃ কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।