ঝিনাইদহ প্রতিনিধি>>
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করে ঝিনাইদহ জেলার ইউনিয়ন পরিষদ ‘হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর’ পদে দুর্নীতি ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেনের দপ্তরে উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত উদ্যোক্তারা। অভিযোগ পত্রে ১০জন ইউডিসি স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগ করা হয়েছে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তড়িঘড়ি করে এই নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া মহামান্য আদালতে দায়েরকৃত রীট পিটিশন নম্বর ১৩০৪৮/২০১৯, ১৪১৩৪/২০১৯ এবং ১৪৮৮৮/২০১৯ এ সর্বমোট ৫৩ জন প্রার্থী যার মধ্যে ঝিনাইদহ জেলা থেকে ৪৮জন প্রার্থীর পদ শূণ্য রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেখানে মাত্র ১৮টি পদ শুন্য রেখে বাকী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর’ পদে ৯ জন প্রার্থীকে কোন লিখিত পরীক্ষা না নিয়েই অগ্রাধিকার প্রার্থীর তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। এই রোলগুলো হচ্ছে ৬৭৯, ৫৩৯, ৪৭১, ৫৪৮, ১১৪, ৭০২, ২১৪, ৫৮৭ ও ১২৬৩। কীভাবে তারা নিয়োগ পেলেন এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে ৪৮জন রিটকারীকে মামলা তুলে নেওয়ার অনুঘটক হিসেবে কাজ করেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৭নং মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা অনুপ কুমার। তিনিই টাকার বিনিময়ে ২১জন রিটকারীকে দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর মুচলেকা লিখে নেন। যার দরুন ঝিনাইদহ জেলাতে ৪৯টি ইউনিয়নে ‘হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর’ এর শূন্য পদে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দিতে সক্ষম হন।
তবে উদ্যোক্তা অনুপ কুমার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি সব সময় মামলা চালানোর বিপক্ষে ছিলাম, কারণ সরকারি নীতিমালার সঙ্গে আমাদের দাবি সঠিক ছিল না। ‘হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর’ পদে নিয়োগ পেতে হলে কমার্সের ছাত্র হতে হবে। তিনি স্বীকার করেন, বিদায়ী জেলা প্রশাসকের কাছে মামলা খরচ বাবদ আমরা অর্থ দাবি করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সেদিন কেউ আসেনি। পাল্টা অভিযোগ তুলে অনুপ কুমার বলেন, এই মামলা চালানোর আড়ালে কিছু ইউডিসি বাণিজ্য করছে। তাদের ব্যবসা সফল হচ্ছে না বিধায় নতুন নতুন অভিযোগ করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের বিদায়ী জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, যথাযথ আইন মেনেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডে তো আমি একা ছিলাম না। ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার, পৌরসভার মেয়ার, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন। সবার স্বাক্ষরে রেজুলেশন লেখা হয়েছে। কোন আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, ১৮টি পদ শুন্য রেখেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ওরা যদি আইনী লড়াইয়ে জয়ী হয়, তবে শুন্যপদে যোগদান করতে পারবেন।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, আমি আসার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ফলে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তিনি বলেন, আমাকে সার্কিট হাউসে বসিয়ে রাখার বিষয়টি বোধ হয় ঠিক নয়। কারণ আমি ৬ মার্চ এসে ৭ মার্চ যোগদান করেছি। আর নিয়োগ হয়েছে তার ১/২ দিন আগে।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের ব্যাক্তিগত সহকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল জানান, ঝিনাইদহ থেকে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা একটি অভিযোগ স্যারের কাছে জমা দিয়েছেন। স্যার বলেছেন তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো. ওমর ফারুক, উপ-সম্পাদক : মুন্সী নাজমুল হোসেন
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিস : শ্রীমদ্দি মোড়ের বাজার, হোমনা, কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।