ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক:
ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষয় ক্ষতি কমাতে বিগত দুই দিন ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাসাবাড়ী, সিএসজি স্টেশন ও শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেন কর্নফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানাী লিঃ(কেজিডিসিএল)। ফলে বাসাবাড়ীতে খাবারের সংকট প্রকট হয়ে যায়, খাবার কিনতে হোটেল রেস্তোরাঁয় ভিড় করলেও সেখানেও গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় নাকাল এবং বাড়তি টাকায় খাবার কিনতে বাধ্য হয়েছেন। এসুযোগে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডিারের মূল্যবৃদ্ধি করে ১২শত টাকার সিলিন্ডার ৩ হাজার টাকার, রাইস কুকার, স্টোভ ও কেরেসিনের তেলের দাম আকাশচুম্বী করে এক শ্রেণির অ’সাধু ব্যবসায়ী প্রচুর টাকা হা’তিয়ে নিয়েছেন। চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় গণপরিবহন, সিএনজিও টেক্সিগুলোও বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ অবস্থায় নগরবাসীর এই দুঃখ দুদর্শা লাগবে ক্যাব চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ দ্রুত ছুটে যান কর্নফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানাী লিঃ (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষের কাছে। ১৫ মে ২০২৩ইং কেজিডিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে জরুরি সভা করে গ্রাহকদের উদ্বেগ জানান এবং দ্রুত গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানান দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ। কেজিডিসিএল এর ব্যবস্থ্পানা পরিচালক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের সাথে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় অংশ নেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব চান্দগাও থানা সভাপতি মোঃ জানে আলম, ক্যাব যুব গ্রুপ বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কে এন রিয়াদ, ক্যাব যুব গ্রুপ মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ। কেজিডিএল ইঞ্জিনিয়ারিং সাভিসেস এর মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মুহাম্মদ রইস উদ্দীন আহমদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাব চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দের উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার পরিপ্রেক্ষিতে কেজিডিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, ‘অতিদ্রুত চট্টগ্রাম নগরে বাসাবাড়ীতে ও সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। ইতোমধ্যেই গ্যাস সংযোগ স্বাভাবিক করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে মহেশখালীতে অবস্থিত এলএনজি টার্মিনালগুলো নিরাপদে সরানো হয়। যার কারণে চট্টগ্রামে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হয় এবং গ্রাহকদেরকে অবহিত করা হয়। পত্র-পত্রিকা ও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হয়।
ক্যাব নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম মহানগরে এলএনজি নির্ভর গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থার কারণে যে কোনভাবে আমদানিতে সংকট হলেই চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট প্রকট হয়ে যায়। এ অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ন্যাশনাল গ্রীড থেকে বাখরাবাদ বা দেশীয় মজুত থেকে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান। একই সাথে যে কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা যে কোন সংকট মোকাবেলায় বিকল্প ব্যবস্থায় বাসাবাড়ী ও সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা এবং দেশীয় গ্যাসে চট্টগ্রামের হিস্যা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানাী লিঃ(কেজিডিসিএল) এর বসতবাড়ীতে ৫ লক্ষ ৯৭ হাজার সংযোগ আছে, যেখানে গ্যাসের চাহিদা প্রায় দৈনিক ৫০ মিলিয়ন ঘনমিটার। ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বাসাবাড়ীতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় প্রতি পরিবারে ২ দিনে প্রায় ৪ হাজার টাকার মতো অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়াও মন্ত্রী ও কেজিডিসিএল এর মধ্যে কার্যকর সমন্বয় না থাকায় গ্যাস সংকট স্বাভাবিক নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। তাই সুষ্ঠু সমন্বয় নিশ্চিত করার দাবি জানান।