মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের বঙ্গবন্ধু তাঁত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কারখানা বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অর্ধকোটি টাকারও বেশি মূল্যের এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ। কোটি টাকা বরাদ্দের এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সূচনালগ্ন থেকেই অ'নিয়ম আর দু'র্নীতির কারণে কেন্দ্রটির উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ভেস্তে যায়। ২০১৭ সাল থেকে একের পর এক ইউএনও বদলির কারণে কারখানার কার্যক্রম ধীরগতিতে রূপ নেয়।
উপজেলার আবিরেরপাড়া মৌজায় অবস্থিত আদিবাসী উন্নয়ন সংস্থার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্মিত হয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি । এ জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান দেশে এটিই প্রথম।
উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ মে ইউএনও হিসেবে ঘোড়াঘাট উপজেলায় যোগদান করেন টিএমএ মমিন। এরপর থেকেই তিনি উপজেলায় নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ ১০টি উদ্যোগের মধ্যে পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের স্বাবলম্বী করার কাজকে এগিয়ে নিতে তাঁত প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চালু করেন।২০১৭-১৮ অর্থবছরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের উন্নয়নে বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত) শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু তাঁত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কারখানা।
নরসিংদীর মাধবদী থেকে পুরনো ২০টি তাঁত মেশিন আনা হয় এবং ১০টি তাতেঁর কাঁচামাল ক্রয় করে প্রশিক্ষণ ও উৎপাদন শুরু করানো হয়। সিরাজগঞ্জ থেকে দক্ষ প্রশিক্ষক আনা হয় কারখানায় এবং পাশাপাশি উন্নতমানের লুঙ্গিও প্রস্তুত করা হয়। অল্পদিনের মধ্যেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে- মেয়েরা চরকার মাধ্যমে মাক্কুতে সুতা তোলার কাজ শিখে কাজও শুরু করে। কারখানা থেকে তৈরিকৃত পণ্যের ব্রান্ডিং নাম রাখা হয় ‘এথনিক’। কারখানাটির পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অর্থায়ন পরিচালনা করেন ‘ইউএনও’। ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় বছর দু'য়েক কারখানাটি ভালই চলছিল। কিন্তু করোনা এবং একের পর এক ইউএনও বদলির কারণে কারখানার কার্যক্রম ধীরগতিতে রূপ নেয়।
কিছুদিন পর পরই ৩/৪টি করে তাঁত মেশিন বন্ধ হতে থাকে এবং একে একে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরাও কারখানায় আসা বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে ১জন সহকারী প্রশিক্ষক ও ১জন কেয়ারটেকার ছাড়া বাকিরা বেতনভাতার সমস্যায় অন্যত্র চলে গেছে। অপরদিকে ২০টি তাঁত মেশিনের মধ্যে ১৮টি বিকল হয়ে পড়ে আছে। মাত্র দু'টি তাঁত মেশিন কোন রকম চললেও পুঁজি ও যথাযথ তদারকির অভাবে বন্ধ প্রায় সম্ভাবনাময় কারখানাটি।
এ ব্যাপারে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি কারখানার বিষয়ে তেমন কিছু জানতাম না। যোগদানের পর থেকে উপজেলার সব বিষয়ে জানার চেষ্টা করছি। কারখানা থেকে আয়ের কোনো অবশিষ্ট ফান্ড আমি এসে পাইনি। এ মাসের মধ্যে আপাতত কারখানার ২টি তাঁত মেশিন চালু করবো। পর্যায়ক্রমে অন্য তাঁত মেশিনগুলোও চালু করার চেষ্টা করবো।'
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, উপ-সম্পাদক : মুন্সী নাজমুল হোসেন
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিস : শ্রীমদ্দি মোড়ের বাজার, হোমনা, কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।