মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৪২৬ হেক্টর জমিতে হাইব্রীডসহ আগাম জাতের আমন ধানের আবাদ হয়েছে।মাঠ থেকে ধান কাটা ও মাড়াইসহ বাজারজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা|
দেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত কয়েকটি জেলার মধ্যে দিনাজপুর একটি।
উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল ফসল উৎপাদনে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত কয়েকটি উপজেলার মধ্যে ঘোড়াঘাট উপজেলা এগিয়ে।
এবার অন্যান্য ফসলের ন্যায় আগাম জাতের ধান আবাদ ভাল হয়েছে| অতিরিক্ত ফসল হিসেবে এসব জমিতে সরিষা, আলু ও শাকসব্জি আবাদের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন কৃষকেরা।
ইতোমধ্যেই আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে| বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আগাম জাতের আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
আগাম ধান কাটায় খাদ্যের চাহিদা পূরণ, বাজারে অধিক মূল্য ও কাঁচা খড় বিক্রিতে অধিক দামের মাধ্যমে কৃষকরা সবদিক থেকে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি একই জমিতে শীতকালীন সব্জি,ভুট্টা ও আলু আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজলার সিংড়া ইউনিয়নের ভর্নাপাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ মাসুদ জানান, তিনি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে লাল তীর,জটাপাড়ী, আগাম জাতের আমন ধান রোপণ করেন|তিনি বিঘা প্রতি ১৫-১৮ মন করে ফলন পেয়েছেন।
গুয়াগাছী গ্রামের মোঃ আঃ হামিদ জানান, তিনি ৫ বিঘা জমিতে লাল তীর জাতের আমন ধান রোপণ করেছেন। তিনি বিঘা প্রতি ১৮-২০ মন করে ফলন পেয়েছেন।
কৃষকরা বলেন, আগাম জাতের ধান ঘরে তুলতে পেরে খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হজাজার ২০০ টাকা মন দরে কাঁচা ধান বিক্রি করতে পারছেন।
আগাম জাতের ধান বিক্রি করে কৃষকেরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি সংকট কালীন কাঁচা খড় বিক্রি করেও মোটা অংকের অর্থ আয় করতে পারছে।
ধানের কাঁচা খড়ের আঁটি গো-খাদ্য হিসেবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি বিঘার খড় ৭-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া একই জমিতে ভুট্টা,আগাম জাতের আলু, কপিসহ শীতকালীন বিভিন্ন প্রকার সব্জি/ফসল রোপণের প্রস্তুতি চলছে কষকদের মাঝে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৪৯ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ করেছে কৃষকরা।
উপজলো কৃষি অফিসার মো, রফিকুজ্জামান জানান, ‘একটি পৌরসভা ঘোড়াঘাট উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে এবার ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়।
এর মধ্যে ২ হাজার ৪২৬ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আমন ধান হীরা-২,জটা পাড়ী,লাল তীর, ও ধানী গোল্ডসহ অন্যান্য ধান রয়েছে। এসব ধানের মধ্যে রয়েছে ধানি গুড়, ব্রি ধান ৭৫, ৮৭ ও ৪৯, বিনা ৭ ও ১৭, টিয়া, তেজ ও জটাপারি প্রভৃতি।
বর্তমানে ধান কাটার পর এসব জমিতে কৃষকেরা আলু,সরিষা ও শাক-সব্জি আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন।
অক্টোবর মাস থেকে আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০’ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।
অতিরিক্ত ফসল আবাদের কথা চিন্তা করে কৃষকদের আগাম জাতের ধান চাষ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আগাম জাতের ধান চাষে ভালো ফলনসহ দামও ভালো পাচ্ছেন। একই জমিতে এসব ফল উঠানোর পর বোরো ধান চাষ করতে পারবেন কৃষকেরা।