মোঃ পারভেজ আলম, জেলা প্রতিনিধি, ঢাকাঃ
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিন শর্তে বাস-মিনিবাসের আসন পূর্ণ করে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে সরকার। দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়া যাবে না, যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক এবং করোনাকালের আগের ভাড়ায় ফিরে যেতে হবে—এসব শর্ত পূরণ করে আসন পূর্ণ করে যাত্রী পরিবহণের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। কিন্তু বর্ধিত ভাড়া বাতিল কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
গতকাল নিজ বাসভবন থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঢাকা জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বাস-মিনিবাস চলাচলের এই নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানান।
আগের ভাড়ায় ফিরে যাওয়া নিয়ে এরই মধ্যে যে সংশয় তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটা ঠিক, অনেক সময় মালিকরা মানতে চান না, আমরা মনিটর করব।’ প্রয়োজনে সরকার কতটা কঠিন হতে পারে তা আপনারা অবগত আছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা কোন ভাবে যাত্রী হয়রানি মেনে নেবো না।
করোনা পরিস্থিতির কারণে যেসব শর্ত দিয়ে বাস-মিনিবাসে ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল, মালিকরা তা মানেননি। এবার বর্ধিত ভাড়া বাতিলের বিষয়টি পরিবহণ মালিকরা কার্যকর করবেন কি না, এ প্রশ্নও রয়েছে।
এ নিয়ে আশঙ্কা ব্যক্ত করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর আগেই বাস মালিকরা বর্ধিত ভাড়া নিচ্ছিলেন। তবু আমরা চেয়েছি আগে বর্ধিত ৬০ শতাংশ প্রত্যাহার করা হোক।’
যদিও বাস মালিকরা বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। রাজধানীতে বিভিন্ন বাস কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন হারে ভাড়া আদায় করে। রাজধানীতে চলাচলকারী মিনিবাসে ভাড়ার কোনো তালিকা রাখা হয় না। বড় কিছু বাসে ভাড়ার তালিকা দেখা গেলেও বেশির ভাগ বাসেই তালিকা নেই।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ২৬ মার্চ সরকার গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। পরে ১ জুন থেকে শর্ত সাপেক্ষে গণপরিবহণ চালু করা হয়। অর্ধেক আসন ফাঁকাসহ নানা শর্তে সীমিত আকারে গণপরিবহণ চালু করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহণ শ্রমিক ও যাত্রীদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে, যাত্রী ওঠার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে এবং বাসের প্রতি ট্রিপে যাত্রী নামিয়ে জীবাণুনাশক ব্যবহার করে বাস জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ওই সব শর্ত মানার প্রতিশ্রুতিতে সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, যদিও ৮০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর দাবি ছিল মালিকদের।
করোনাকালে কিছুদিন পরিবহণ মালিকরা শর্ত মানলেও ঈদুল আজহার আগে থেকে সব কিছু ভেঙে পড়ে। সরকারের দেওয়া কোনো শর্তই মানা হয়নি। তবে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া ঠিকই নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থার পর বিভিন্ন মহল থেকে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি ওঠে। গত ১২ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আতিকুর রহমানের পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. হাসিম উদ্দিন বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার চেয়ে একটি রিট আবেদন করেন। তার আগে ১১ আগস্ট যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি তোলেন। ২৩ আগস্ট একই দাবিতে তিনি গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠান। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ আগস্ট বাস মালিক সমিতিগুলো বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ আগস্ট বনানীতে বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ, বাস মালিক সংগঠন ও শ্রমিক নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। বাস মালিকরা আসন পূর্ণ করে যাত্রী পরিবহণের শর্তে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার চান। ওই সময় বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ দাঁড়িয়ে যাত্রী বহন না করা এবং মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করে মন্ত্রিপরিষদে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের সুপারিশ পাঠায়। এই শর্তে ১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহণ চালু হচ্ছে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি: প্রফেসর নূর মো. রহমত উল্লাহ। নির্বাহী সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, উপ-সম্পাদক : মুন্সী নাজমুল হোসেন
ইমেইল: mdibrahimkhalil494@gmail.com মোবাইল: ০১৭৫৪-২২২৫০২
অফিস : শ্রীমদ্দি মোড়ের বাজার, হোমনা, কুমিল্লা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. ইব্রাহিম খলিল কর্তৃক কুমিল্লা জেলা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।